হোসেনি দালান: ৪০০ বছরের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন

হোসেনি দালান: ৪০০ বছরের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন
হোসেনি দালান: ৪০০ বছরের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন  © ফাইল ফটো

হোসেনি দালান ইসলামি স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন। দোতলা এ ইমারতের সৌন্দর্য অসাধারণ। শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এই হোসেনি দালান ইমামবাড়া নামেও পরিচিত। আবার অনেকে হুসনি দালান বা হোসায়নি দালানও বলেন। হোসেনি দালান মূলত শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মসজিদ এবং কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি শিয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মহররম পালনের প্রধান কেন্দ্রভূমি। প্রতি বছর এখান থেকে মহররমের মিছিল বের করা হয়। যদিও করোনার কারনে গত ২ বছর তাজিয়া মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন।

দালানটি নির্মাণের সময়কাল অস্পষ্ট। এ বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ইমারতের গায়ের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৬৪২ সালে শাহ সুজার সেনাপতি মীর মুরাদ এটি নির্মাণ করেন। জানা যায়, মীর মুরাদ ইন্তেকাল করেন ১৭১৮ সালে।

হোসেনি দালান বা ইমামবাড়ার দক্ষিণাংশে রয়েছে একটি বর্গাকৃতির পুকুর এবং উত্তরাংশে রয়েছে কবরস্থান। দালানটি সাদা বর্ণের এবং এর বহিরাংশে নীল বর্ণের ক্যালিগ্রাফির কারুকাজ রয়েছে। একটি উঁচু মঞ্চের ওপর ভবনটি নির্মিত। মসজিদের ভেতরেও সুদৃশ্য নকশা আছে। মোগল সম্রাট শাজাহানের আমলে এটি নির্মিত হয় বলা হলেও এর নির্মাণকাল নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে।

২০১১ সালে ইরান সরকারের উদ্যোগে পুরো হোসেনি দালানের সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়। ইরান সরকার এতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে। ইরানের স্থপতিবিদ ও শিল্পীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। ফলে ইরানের ধর্মীয় স্থাপনার বাহ্যিক রূপ ও নান্দনিকতা এখনকার হোসেনি দালানের প্রতিফলিত হয়েছে।

১০ মহররম আশুরা উপলক্ষে হোসেনি দালানে শিয়া মুসলমানরা নানান আয়োজন করেন। তাদের আগমণে ইমামবাড়া কানায় কানায় ভরে যায়। আশুরার দিনে তার রোজা রাখেন। পরে সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার করেন। আশুরা উপলক্ষে হোসেনি দালান থেকে প্রতিবছর তাজিয়া মিছিলও বের হয়।

হোসেনি দালান এলাকায় ঢাকার কয়েকজন নায়েব-ই-নাজিম এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কবর রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ