বাবাকে গরম তেল ছুড়ে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় মেয়েসহ গ্রেপ্তার ২

পরশুরাম মডেল থানা
পরশুরাম মডেল থানা  © ফাইল ফটো

ফেনীর পরশুরামে বাবাকে গরম তেল ছুড়ে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় মেয়েসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার (৩ মার্চ) গ্রেপ্তারের বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেন পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভুক্তভোগী মো. নূর নবী নিজ মেয়ে (১৩) এবং মো. নূর নবী সাবেক স্ত্রীর ভাই দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের মনির আহমেদের ছেলে মো. জাবেদ (৩০)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার (২ মার্চ) দুপুরে  ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে পরশুরাম মডেল থানায় মামলা করেন। ভুক্তভোগীর মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তেল ছুড়ে ঝলসে দেওয়ার ঘটনাটি স্বীকার করে। তিনি জানান তার মাকে ডিভোর্স দেওয়ার কারণে সে ক্ষুব্ধ হয়ে এই কাজটি করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগী তার মেয়েসহ ৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী নূর নবী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় আমার মেয়ে হঠাৎ এসে আমার মুখ ও শরীরে গরম তেল ছোড়ে মারেন। এতে আমার মুখসহ শরীরের একটি অংশ ঝলসে গেছে। এর আগে তার সঙ্গে আমার তেমন কোনো ধরনের রাগারাগিও হয়নি। বর্তমানে তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এদিকে, মামলার বিবাদী ও ভুক্তভোগীর (নূর নবী) ভাই আবদুর রহিম বলেন, আমি, আমার শ্বশুর মনির আহমদ এবং শ্যালক মো. জাবেদ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। আমাদেরকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। লামিয়া হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ভুক্তভোগীর মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তেল ছুঁড়ে ঝলসে দেওয়ার ঘটনাটি স্বীকার করে। সে জানায়, তার মাকে ডিভোর্স দেওয়ার কারণে সে ক্ষুব্ধ হয়ে এই কাজটি করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগী তার মেয়েসহ চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর মেয়ে ও তার মামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামা বর্তমানে কারাগারে আছেন এবং নিহাকে গাজীপুর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে বলে জানান ওসি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মো. নূর নবীর বাড়িতে গিয়ে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের লোক দাবি করে দরজা খুলতে বলেন হেলমেট পরা দুই যুবক। তখন ভেতর থেকে শিশুরা দরজা খুলে দিলে তারা (দুই যুবক) ঘরের ভেতরে ঢুকে শিশু লামিয়াকে (৭) স্কচটেপ দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করে। এ সময় বড় বোন পালিয়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শিশু লামিয়া হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে নিহতের মা আয়েশা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কয়েকমাস কারাভোগের পর বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। গত বছরের ১৫ মার্চ এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী লামিয়ার বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহার বর্ণনা অনুযায়ী হত্যাকারীদের ছবি (স্কেচ) এঁকে নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ