শেখ হাসিনার সহযোগীরা লুট করেছেন ২ লাখ কোটি টাকা: গভর্নর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২০ PM , আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২০ PM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা তার শাসনামলে ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সরিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকর গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এর মধ্যে ‘অন্তত’ ১০ বিলিয়ন ডলার একাই সরিয়েছেন এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল ইসলাম। একটি গোয়েন্দা সংস্থার কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগসাজশ করে এসব অর্থ সরানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে আহসান মনসুর বলেন, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা দপ্তরের সাবেক কিছু কর্মকর্তা শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক দখল করতে সহায়তা করেছেন। তিনি জানান, এসব ব্যাংক দখল করে আনুমানিক ২ লাখ কোটি টাকা (১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার) বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন শেয়ারধারীদের ঋণ দেওয়া ও আমদানির অতিরিক্ত খরচ দেখানোর মতো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, যেকোনো বৈশ্বিক মানদণ্ডে এটি সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে ব্যাপক ব্যাংক ডাকাতি। এই মাত্রায় (ব্যাংক ডাকাতি) অন্য কোথাও হয়নি। এটি ছিল রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট এবং গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জড়িতরা (ব্যাংকের সাবেক প্রধান নির্বাহীদের) মাথায় বন্দুক না ঠেকালে এটা হতে পারত না।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডিজিএফআইয়ের সহায়তায় কয়েকটি ব্যাংক দখল করার পর ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা ‘অন্তত’ ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ‘বের করে নিয়েছেন’। তার মতে, প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের নামে ঋণ দিয়ে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
সাইফুল আলমের পক্ষে আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন এমানুয়েল আরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে এস আলম গ্রুপ জানিয়েছে, গভর্নরের অভিযোগের ‘কোনো সত্যতা নেই’।
বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত প্রচারণা যথাযথ প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিগুলোকেও সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ইতোমধ্যে বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়েছে। অর্থনীতিতে গ্রুপের রেকর্ড এবং অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নরের অভিযোগগুলো আশ্চর্যজনক এবং অযৌক্তিক।’
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সংস্থাটির বক্তব্য জানতে চেষ্টা করা হলে তারা তাতে সাড়া দেননি।
শেখ হাসিনা দুই দশক ধরে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানিকারক দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু তার শাসনামলে ভোট কারচুপি, বিরোধীদের কারাগারে পাঠানো ও নির্যাতন করা এবং ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আগস্টে তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকার অর্থ উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেয়।