প্রতিবেশী দেশগুলোয় কত বয়স পর্যন্ত হয় সরকারি চাকরি?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৪ PM , আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৪ PM
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনবার বিসিএসে বসতে পারবেন, এমন ধারা সংযোজিত হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এর ধারা ৫৯-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শিগগিরই এমন ধারা সংযোজন করবে।
এদিকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ করার সিদ্ধান্ত এবং বিসিএস সর্বোচ্চ তিনবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখানের ঘোষণা দিয়েছে ‘৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’।
এ অবস্থায় চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি করতে পারবেন না নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীরা: আসিফ
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতে রাজ্যভেদে ও চাকরির ধরন অনুযায়ী আবেদনের বয়সসীমা ৩২ থেকে ৪২ বছর পর্যন্ত। দেশটিতে প্রশাসনিক সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে হলে ন্যূনতম ২১ থেকে ৩২ বছর বয়স হতে হয়। তবে কোটায় ৪২ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন কর যায়। অনগ্রসর শ্রেণির জনগণ ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। আর দলিতরা ৩৭ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন।
নেপালে গেজেটেড ও নন-গেজেটেড পদে আবেদন করার ক্ষেত্রে পুরুষের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর। তবে নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। গেজেটেড পদ শাখা কর্মকর্তা, উপসচিব এবং যুগ্ম সচিব বা এ ধরনের পদে ন্যূনতম ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। এ পদে নারী ও প্রতিবন্ধীরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন।
শূন্য পদের ক্ষেত্রে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করার বিধান রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রাথমিক স্তরের পদে সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। অফিসার পদে সর্বনিম্ন ২১ ও সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারেন।
আরও পড়ুন: প্রভাব খাটিয়ে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ছেলের, অবশেষে বাতিল
শ্রীলঙ্কায় স্নাতক পাস করা বেকাররা সরকারের যেকোনো কর্মসূচির অধীনে ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। আগে এ বয়সসীমা ছিল ৩৫ বছর। তবে সরকারি চাকরির সব ক্যাটাগরির জন্য এ বয়সসীমা প্রযোজ্য নয়।
পাকিস্তানে সরকারি চাকরিতে ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। তবে কোটার ক্ষেত্রে ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে দেশটির বেলুচিস্তান রাজ্য সরকার বয়সসীমা ৪৩ বছর করেছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে আবেদন করার নিয়ম রয়েছে। আফগানিস্তানে বয়সসীমা ৩৫ বছর। আর মালদ্বীপে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরির আবেদন করা যায়।
আরও পড়ুন: সাত কলেজের সমস্যা খুঁজতে সরকারের কমিটি
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। তাদের দাবির মুখে গত ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটির প্রধান সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনেরও প্রধান।
গত ১৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি।
কমিটির প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, চাকরিতে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৫ এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৩৭ করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছিল উপদেষ্টা পরিষদের ওপর। অবেশেষ আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ করার অনুমোদন দেওয়া হলো।