যুক্তরাষ্ট্রে ৩ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন নাসা গ্রুপের নজরুল

নজরুল ইসলাম মজুমদার
নজরুল ইসলাম মজুমদার   © সংগৃহীত

নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপ ও বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ট্রেড বেইসড মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।

তিনি বলেন, নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের অদ্যাবধি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড থেকে ১৩০টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) গ্রহণ করার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও রপ্তানিমূল্য প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে আনয়ন না করে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের তথ্য প্রমাণ সিআইডি কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

এছাড়া যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারের মাধ্যমে লন্ডনের ফিলিমোর গার্ডেন এবং ব্রান্সউইক গার্ডেনে তার কন্যা আনিকা ইসলামের নামে বাড়ি কেনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড সুবিধার আওতায় বিদেশ থেকে শুল্ক মুক্ত কাঁচামাল এনে সেই পণ্য দেশীয় খোলা বাজারে বিক্রি করে শত শত কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে।

পুলিশ আজাদ রহমান আরও জানান, এছাড়াও নজরুল ইসলাম মজুমদার নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে আমদানি এবং রপ্তানির আড়ালে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমে পৃথক একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান আছে।

আরও পড়ুন: সাকিব-শিশিরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

এছাড়া ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে আমদানি এবং রপ্তানির আড়ালে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে।

নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান নজরুল ২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে প্রায় ১৭ বছর ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) নেতৃত্ব দেন। গত আগস্টের শুরুতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২৯ আগস্ট ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে তাকে ও তার স্ত্রী নাসরিন ইসলামকে সরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।


সর্বশেষ সংবাদ