শহীদী মার্চে গণ মানুষের ঢল, পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ PM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ PM
কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালীন নিহতদের স্মরণে এবং শেখ হাসিনার পতনের একমাস পূর্তি উপলক্ষ্যে শুরু হয় ছাত্র-জনতার ‘শহিদি মার্চ’ কর্মসূচি। স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থীর সঙ্গে এই মার্চে যোগ দিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন গণ মানুষের ঢল নেমেছে। পরবর্তীতে ‘শহীদি মার্চের র্যালি শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।
আরও পড়ুন: গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত সরকারের
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এর আগে গত বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের পক্ষ থেকে সবাইকে সারা দেশে এই শহীদী মার্চ পালনের আহ্বান জানান তারা।
মুখে স্লোগান, হাতে লাল সবুজের পতাকা। কেউ কেউ মাথায় পতাকা বেঁধেছেন। অনেক শিশুরাও স্কুলের পোশাক পরে এতে যোগ দিয়েছে এই কর্মসূচিতে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থীদের স্মৃতি নিয়ে মার্চে অংশগ্রহণ করেছেন আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে কেন্দ্রীয় পদযাত্রা শুরু হয়। নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। সেখানে কথা বলেন সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের দায়িত্ব সরকারের: নাহিদ ইসলাম
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘সফল হোক সফল হোক, শহীদী মার্চ সফল হোক’, ‘শহীদদের কারণে, ভয় করি না মরণে’ শহীদের রক্ত, বৃথা যেত দেব না’, ‘আজকের এই দিনে শহীদদের মনে পড়ে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আজ ৫ই সেপ্টেম্বর শহীদী মার্চ কর্মসূচির ৫টি দাবি উত্থাপন করা হয়।
দাবিগুলো হলো:
১. গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে
২. শহীদ পরিবারদের আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান করতে হবে।
৩. প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. গণভবনকে কে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর ঘোষণা করতে হবে
৫. রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে
গত জুলাইয়ের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলা-নির্যাতনের এক পর্যায়ে তা সরকারের পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।