ইভ্যালি খুঁজছে নতুন বিনিয়োগ

ইভ্যালি লোগো ও ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. রাসেল
ইভ্যালি লোগো ও ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. রাসেল  © সংগৃহীত

বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। আটকে যাওয়া গ্রাহকের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পূর্বের ডিসকাউন্ট মডেল থেকে বের হয়ে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে প্রতিষ্ঠানটি এখন চলছে। এ ধারাবাহিকতায় দ্রুত ঘুরে দাড়ানোর জন্য নতুন বিনিয়োগ খুঁজছে প্রতিষ্ঠানটি।   

রোববার  ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. রাসেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এক পোস্টে নতুন বিনিয়োগ খোঁজার বিষয়টি জানান। 

তিনি সেখানে লিখেন, ‘আমরা ইভ্যালির জন্য ফান্ডরেইজ করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় আমরা ইভ্যালির সফলতা নিয়ে এখন সবচাইতে বেশি কনফিডেন্ট। নতুন করে ফিরে আসার পর বিগত ৪ মাসে মার্কেটিং এ শূন্য বিনিয়োগ করেও লক্ষ লক্ষ অর্ডার ডেলিভারি করেছে ইভ্যালি, এবং অপারেশনাল প্রফিট এ রান করছে। সেখান থেকে আমরা কিছু দেনাও ইতিমধ্যে শোধ করেছি’ 

তিনি আরো বলেন, ‘এ কারণেই আমরা ইভ্যালির সফলতা এবং ফান্ড রেইজ এর সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী। ফান্ডরেইজিং এর মাধ্যমে আমরা বর্তমান অপারেশনকে ২০ থেকে ৫০ গুণ বাড়িয়ে আরও দ্রুত গ্রো করতে চাই, আরও বেশি প্রফিট জেনারেট করতে চাই, এবং পূর্বের দেনাগুলো আরও দ্রুত পরিশোধ করতে চাই, যেন আমাদের গ্রাহকদের কাছে দেয়া কমিটমেন্ট আমরা সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করতে পারি’ 

একটা কথা আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ ছাড়াও বর্তমান ইভ্যালি এগিয়ে যাবে। কিন্ত দ্রুততম সময়ে ব্যাবসায়িকভাবে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে বিনিয়োগ আমাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শত চড়াই উতরাই আর ভুল ভ্রান্তি ও বিশাল চ্যালেঞ্জ পার হয়ে আসার পরও ইভ্যালির এই পারফরম্যান্স  প্রমাণ করে যে, প্রয়োজনীয় ফান্ড পেলে ইভ্যালি এখন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে পৌছে যাবে দ্রুততম সময়ে। বাংলাদেশের ইকমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে সেই ইকমার্সই শেষ পর্যন্ত সফলতা পাবে যেটি বাংলাদেশিদের তৈরি, বাংলাদেশিদের জন্য তৈরি। সেটি হচ্ছে ইভ্যালি’

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছি, এবং আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ছোট ছোট দেশি বিনিয়োগ একদিকে আমাদের অপারেশনাল এফিশিয়েন্সি ও প্রফিটেবিলিটি যেমন বাড়াবে, তেমনি আমাদের  বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনাকে অনেক ত্বরান্বিত করবে।ইভ্যালির এই অসাধারণ যাত্রায় যদি বিনিয়োগ এর মাধ্যমে কেউ প্রাথমিকভাবে এগিয়ে আসতে চান, আপনারা সময় দিলে সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাতে চাই’ 

উল্লেখ্য ইভ্যালির সিইও  রাসেল ইভ্যালিরই গ্রাহকদের দায়ের করা প্রতারণা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর আটক হয়েছিলেন। সম্প্রতি সব মামলা জামিন লাভের পর গত ১৮ই ডিসেম্বর তিনি ছাড়া পান। তার সাথে একই দিনের প্রতিষ্ঠানটির তখনকার চেয়ারম্যান তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনও আটক হয়েছিলেন। তিনি অবশ্য আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

তাদের আটকের পর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনার জন্য সাবেক বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।

রাসেলের আটকের পর ইভ্যালির কার্যক্রম থমকে যায়। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ডিজিটাল ই-কমার্স পরিচালন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি জানিয়েছিল যে, গ্রাহক, মার্চেন্ট ও অন্যান্য সংস্থার কাছে ইভ্যালির দেনা মোট ৫৪৩ কোটি টাকা।

নিয়ম নীতি মেনে ঠিকমতো ব্যবসা চালাতে পারলে এই টাকা শোধ করতে খুব বেশী সময় তাদের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি সে সময় জানান। 


সর্বশেষ সংবাদ