আজ জুমাতুল বিদা, দুই কারণে মর্যাদাপূর্ণ দিনটি

নামাজ
নামাজ  © সংগৃহীত

আজ শুক্রবার। পবিত্র রমজানুল কারিমের শেষ শুক্রবার মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটি ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। প্রতি বছর বিশ্ব মুসলিম ইবাদত-বন্দেগি ও জিকির-আসকারের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও রহমত কামনা করে থাকে।

ইসলামের প্রাথমিক যুগেও জুম্মার প্রচলন ছিল। সে সময় জুমার দিনকে ‘ইয়াওমে আরুবা’ বলা হতো, যা ইহুদি, খ্রিষ্টান তথা জাহেলি সম্প্রদায়ের লোকেরা পালন করত। ‘জুমা’ শব্দটি আরবি, যার অর্থ হচ্ছে একত্রিত হওয়া, দলবদ্ধ হওয়া, সমবেত হওয়া ইত্যাদি। পবিত্র কুরআনুল কারিমে এই দিনকে ‘ইয়াওমুল জুমা’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। 

সারা মাসের না পাওয়ার বেদনায় কাঁদবে মুমিন এই দিনে। রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের প্রত্যাশা প্রাপ্তির হিসাব কষবে। নাজাতের পঞ্চম দিনের অতিরিক্ত মর্যাদা পবিত্র জুমাতুল বিদা। জুমাতুল বিদা বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার প্রধানতম দুটি কারণ রয়েছে।

ক. অন্য এগারো মাসের তুলনায় রোজার মাসের মর্যাদা- আবু হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত রাসুল সা. বলেছেন, রোজার প্রতি মুহূর্তের প্রতিটি আমলের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতাশগুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। [বুখারি]

খ. সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর তুলনায় জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব- আবু হুরায়রা

রসুলুল্লাহ (স.) মদিনায় হিজরতের পর এই দিনকে জুমার দিন নামকরণ করেছেন এবং মদিনায় যাওয়ার পথে কুবা নামক স্থানে জুমার নামাজ আদায় করেছিলেন। এই দিনে হজরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এ দিনেই তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। আর এ দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলমান নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই তার দোয়া কবুল করা হয়। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৯১)। দ্বিতীয়ত রমজান মাসে রোজা অবস্থায় জুমার দিনের নিশ্চিত দোয়া কবুলের শেষ সুযোগ হিসেবে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্রে বর্ণিত রাসূল সা. বলেন, সপ্তাহের দিনসমূহে জুমার দিন সর্বশ্রেষ্ঠ। এই দিনে হজরত আদম আ.-এর সৃষ্টি, তাকে জান্নাতে প্রবেশ ও পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। জুমার দিনেই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। [মুসলিম]

জুমার দিনের কিছু সুন্নত আমল রয়েছে। যেমন (১) সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করতে হবে (২) নতুন বা উত্তম জামাকাপড় পরতে হবে (৩) আতর তথা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে (৪) হেঁটে মসজিদে যেতে হবে (৫) আগে আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে (৬) ইমামের কাছাকাছি জায়গায় বসতে হবে। (৭) ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে (৮) বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করতে হবে (৯) কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, কোনো অনর্থক কাজ করা যাবে না।

হজরত আওস ইবনে আওস আস-সাকাফি (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালো করে গোসল করবে এবং আগে আগে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসে খুতবা মনোযোগসহকারে শুনবে আর কোনো রকম অনর্থক কাজ করবে না তাকে তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে লাগাতার এক বছর নামাজ ও রোজার সওয়াব দান করা হবে। (সুনানে ইবনে মাযা, হাদিস : ১০৮৭)।

 

সর্বশেষ সংবাদ