এরা ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © সংগৃহীত

রেললাইনের ফিশপ্লেট তুলে নেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখানে একটা আবেদন থাকবে, রেললাইন বা বাসে যখনই এমন ঘটনা ঘটাবে সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে মাঠে নামতে হবে। জনগণ যদি মাঠে নামে এরা হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে জানে, এরা সৃষ্টি করতে পারে না। এরা মানুষ খুন করতে পারে, মানুষের জীবনে শান্তি-নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, মানুষের জীবনটাকে উন্নত করতে পারে না। কাজেই তাদের থেকে সাবধান।’

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে সাম্প্রদায়িক হামলাসহ নানামুখী অত্যাচার-অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন।

রেললাইন ফিশপ্লেট তুলে ফেলার ঘটনাকে জঘন্য কাজ দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করে; এরা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে কোন মুখে? হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না। এটা দেশের মানুষকে বুঝতে হবে। যারা জ্বালাও-পোড়াও করে রেললাইনের ফিশপ্লেট তুলে ফেলে, এরা পরাজিত শক্তির দালাল আর পরাজিত শক্তির দোসর। কাজেই এদেরকে ‘না’ বলুন। এদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার-ই কোনো অধিকার নাই। আমরা এ দেশকে আর কখনো এই পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেব না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থাকলে এদেশের মানুষ সেবা পায়। মানুষের ক্ষতিটা কোথায় হলো? আজ তো সেই ছিন্ন কাপড় পরে, আদুল গায়ে ক্ষুধার্ত পেট নিয়ে মানুষ আসে না? এখন তো মানুষের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা প্রতিটি মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজ বিদেশে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে সম্মান পায়।’

আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ বিমান দেখে মানুষ উৎফুলিত হয়েছে: জাফর ইকবাল

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না, বৃথা যায়নি। আজকের বাংলাদেশ এই ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত-উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, আমরা সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। এদেশের মানুষ আর কখনো কারও কাছে হাত পেতে চলবে না, ভিক্ষা করে চলবে না। এই দেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলবে। কারণ, মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী জাতি আমরা। বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলব।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। তারা ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। তারা শান্তিতে বাস করবে, উন্নত জীবন পাবে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’ এ সময় বুদ্ধিজীবীসহ সকল শহিদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ ১৫ আগস্টে শাহাদাৎবরণকারীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শহিদ বুদ্ধিজীবী ফয়জুর রহমান আহমেদের সন্তান মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানসহ অন্যান্যরা বক্তৃতা করেন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।


সর্বশেষ সংবাদ