ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফুল হাতার জামা পরার পরামর্শ ডব্লিউএইচওর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩১ AM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩১ AM
গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও। এর মধ্যে মারাও যাচ্ছেন অনেকে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে ফুল হাতার জামা পরার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ডেঙ্গু মশার বিস্তার কমাতে যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) সংস্থাটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৪৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩২৭ জনের। যার মধ্যে ৬২ শতাংশ শনাক্ত এবং ৬৩ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শুধু গেল জুলাই মাসেই। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার বেড়ে ০.৪৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ৫ বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এ বছরের আক্রান্ত ও মৃত্যুকে নজিরবিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ‘ডেঙ্গুর আধিক্যতা দেখা যাচ্ছে অস্বাভাবিক আকস্মিক বৃষ্টির কারণে। যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ আর্দ্রতা। এসব কারণে পুরো বাংলাদেশজুড়ে মশার বংশ বিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের মূল্যায়নে বলেছে বাংলাদেশ ডেঙ্গুর ‘উচ্চ’ ঝুঁকিতে রয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি এবং ব্যাপক ভৌগলিক বিস্তৃতির কারণেই সংস্থাটি এমন মূল্যায়ন দিয়েছে।
অপরদিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সতর্কতার অংশ হিসেবে ফুলহাতা শার্ট-প্যান্ট পরা, মশার কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার, দরজা-জানালায় মশা প্রতিরোধী জাল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান ডব্লিউএইচওর
মশার বিস্তৃতি রোধে ডব্লিউএইচও সমন্বিত ভেক্টর ব্যবস্থাপনা (আইভিএম) গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া মানুষকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে তারা। যার মধ্যে রয়েছে মশার প্রজনন সহায়ক স্থানগুলো ধ্বংস করা। এছাড়া সতর্কতা হিসেবে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও ঘরের পানি জমিয়ে রাখার পাত্র বা ট্যাংক পরিষ্কার ও ঢেকে রাখা, মশারি ব্যবহার ও স্প্রে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
ডেঙ্গু জ্বর মূলত এডিস এজিপ্টি (Aedes aegypti) মশার কামড়ে হয়। তবে সব মশার কামড়ে এ জ্বর হয় না। এই মশা তখনই ক্ষতিকর হবে যখন এই মশা ডেঙ্গু জ্বরে সংক্রমিত কোনো ব্যক্তিকে কামড় দেবে। ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস তখন এই মশা বহন করবে এবং এই মশা যখন কোনো সুস্থ মানুষকে কামড় দেবে তখন ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারেন। আবহাওয়ার এই সময়ে একদিকে চলছে বৃষ্টি, অন্যদিকে গরম। পাশাপাশি বেড়েছে মশার উৎপাত।
মশার কামড় থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার ভয়ও রয়েছে। এ জন্য সচেতনতা প্রয়োজন আরও বেশি। মশার কয়েল কিংবা স্প্রে তো আছেই, এমন পরিস্থিতিতে রাসায়নিক প্রতিরোধে দ্রুত সমাধান মিললেও অনেকেই খুঁজছেন তার নিজ বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়। পাশাপাশি ঘরোয়াভাবে চেষ্টা করতে পারেন মশা তাড়াতে। আপনার আশ্রয়স্থলটিকে মশামুক্ত রাখার জন্য এমন কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক, যেখানে আপনার স্বাস্থ্য ও চারপাশের পরিবেশ দুই-ই ভালো থাকবে।