নতুন রাষ্ট্রপতিকে বরণে প্রস্তুত বঙ্গভবন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৪১ AM , আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৫, ১০:২১ AM
দেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিবেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। আর বিদায় নিতে যাচ্ছেন টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. আবদুল হামিদ। তাই বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে বিদায় এবং নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে বরণ করতে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে বঙ্গভবন।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। শপথের পর নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নথিতে সই করবেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
রাষ্ট্রপতির সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, শপথগ্রহণের পরপরই নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ার বদল করবেন।
জানা গেছে, শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কয়েকশ অতিথি উপস্থিত থাকবেন। শপথ অনুষ্ঠান শেষে দুপুরে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গভবন ত্যাগ করবেন।
এরইমধ্যে বঙ্গভবন থেকে তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। এরপর সন্ধ্যায় নতুন রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবনে উঠবেন। তবে আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে পরদিন মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হবে।
এর আগে, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. সাহাবুদ্দিন। আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
দীর্ঘ ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর মেয়াদ শেষ করছেন মো. আব্দুল হামিদ। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ১৪ মার্চ ২০১৩ থেকে মো. আবদুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০ মার্চ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে তিনি সে দিন থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ২২ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি পুনর্নির্বাচিত হন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ৭৩ বছর বয়সী মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা।
মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন এ রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুুটি শেষ, আজ খুলেছে অফিস-আদালত-ব্যাংক-বীমা
নতুন রাষ্ট্রপতি ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি পাবনায় আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন। পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।