সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে মাত্রাতিরিক্ত সীসার উপস্থিতি
- টিডিস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১১:২৬ AM , আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১১:২৬ AM
দেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশুর শরীরে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকারক সীসা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে এক কোটি শিশুর রক্তে রয়েছে ১০ মাইক্রোগ্রাম পার ডেসিলিটারের বেশি সিসা। দুই বছর থেকে চার বছর বয়সি শিশুদের শতভাগের শরীরে সিসার উপস্থিতি মিলেছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ‘আন্তর্জাতিক সীসা পয়োজনিং সপ্তাহ-২০২২’ উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শিশু সংস্থা ইউনিসেফের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদারময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি) পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে জানানো হয়, বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের শরীরে এ সীসার নেতিবাচক প্রভাব বেশি। এর প্রভাবে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা কমে যায়। মনযোগের ঘাটতি তৈরি করে এবং লেখাপড়ায় তারা দুর্বল হয়ে পড়ে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের চার জেলায় শিশুদের রক্তে সিসার সক্রিয় উপস্থিতি মিলেছে। এসব জেলা হল টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট, পটুয়াখালী। রক্তে সিসার উপস্থিতি থাকা শিশুদের মধ্যে ৬৫ শতাংশের রক্তে এর পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত, যারা উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।
এছাড়া ঢাকার ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষায় সবার শরীরেই সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাজারের বিভিন্ন পণ্য পরীক্ষা করে ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টিতে সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাটি, ছাই, পোড়া মাটি ও হলুদের গুঁড়ায় সীসার উপস্থিতি দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: রাবি-রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন ১২ নভেম্বর।
সীসা দ্বারা দূষিত হলুদের গুঁড়া গর্ভবতী নারীর শরীরে উচ্চ মাত্রার সীসার উপস্থিতির কারণ। পল্লী এলাকায় পরীক্ষা করা ৩০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষকেরা জানান, সীসা শিশুর আচরণগত সমস্যা তৈরি করে এমনকি শ্রবণ ও বাক সমস্যাও তৈরি করতে পারে।
সেমিনারে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, সারা বিশ্বেই শিশুরা সীসা দূষণের শিকার। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে আমরা এটা জেনে আনন্দিত যে, বাংলাদেশে সীসা দূষণ কীভাবে কমিয়ে আনা যায় তা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কাজ হচ্ছে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েটসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।