বৈশাখী ঝড়ে উড়ানো পত্র

লেখক শেখ তামান্না
লেখক শেখ তামান্না  © সংগৃহীত

প্রিয়.........

কেমন আছো জানতে চাওয়াটা উচিত কিনা ভাবতে ভাবতেই আর জিগ্যেস করা হলো না। আমি কেমন আছি তাও নাহয় অজানাই থাকুক, অথবা তা তোমার ভালো থাকার তুলাদণ্ডে মেপে নিও।

বৈশাখী শুভেচ্ছা নিও। পহেলা বৈশাখ হলেও আজ আর বাইরে মানুষের আনন্দ মিছিল তেমন নেই, টিএসসির পাশে কোন কনসার্ট নেই, ভেঁপুর কর্কশ আওয়াজ নেই, খোপায় বেলী ফুল নেই, হাতে চুড়ি নেই, মুখে হাসির রেশ নেই, নেই রঙিন শাড়ি বা পাঞ্জাবী পড়ে হেটে যাওয়া ব্যস্ত মহাসড়কের দুরন্ত মানব মনবীরা। বিকেলের আগেই শেষ হবে আনাগোনা।

আলমারিতে ভাজ না খোলা যে সাদা পাঞ্জাবীটা তোলে রাখা আছে ওটা আজ পড়ে নিও সাথে কিছুটা ফুলের ঘ্রাণ মেখে নিও.....তার পর!! তার পর না হয় আয়নার সামনে দাড়িয়ে খানিকটা তোমার প্রিয়কে ভেবে নিও,,আর গান শোনে নিও,....

কোন এক বৈশাখে দেখা হল দুজনে..

এবার বৈশাখী ঝড়ে সে রুমাল উড়িয়ে দিও, বৈশাখী শুভেচ্ছা নিও..

ও গানওয়ালা তুমি আরেকটা গান গাও...অথবা

বর্ণে, ছন্দে, গন্ধে, গীতিতে, হৃদয়ে দিয়েছ দোলা...

ইউটিউবে খুঁজে শুনে নিও "অচেনা বৈশাখ" গানটাও..

আমি জানি তোমার অনেক কিছু হয়তো বলার থাকবে,বলো না, লিখে রেখো কোন এক সাদা ছিন্ন পত্রে। যেমন: এমনও দিনে তারে বলা যায়....এরকম করে আরকি।

আসছে বছর তাকে কিন্তু ডজন খানেক রঙ্গিন রেশমি চুড়ি আর টিপ কিনে দিও,মনে থাকবে"! সে প্রথাবিরোধী বাঙালী নারী না হয়ে এক হাতে পড়বো রঙিন চুড়ি আর অন্য হাতে বেলী ফুল।

বরাবরেই মতোই সে তখনো পড়বে সোনালী পাড়ের সাদা শাড়ী,মাথায় নানা রঙের ফুল। তুমিও কিন্তু পড়বে সাদা,নাহ অফ হোয়াইট পাঞ্জাবীও পড়তে পারো। কারণটা তো তোমার জানা, সাদা রং ভীষণ সুন্দর একটা রং কিভাবে যে এতো এতো রঙকে প্রস্ফুটিত করতে পারে তা বুঝা মুশকিল।

শিল্পীর সামনে যেমন সাদা ক্যানভাস থাকে তোমার পাঞ্জাবীটা ঔ দিন সাদা ক্যানভাস হয়েই না হয় থাকবে আর নববর্ষের আলোতে রাঙা হবে। মুখে থাকবে অনেক শখে বানানো বহুরূপী বৈশাখী মুখোশ, কে জানে চারুকলায় গিয়ে রঙ পেন্সিলের আঁচড়ে হয়তো তোমার বাঁ কাঁধের সামান্য নীচে পাঞ্জাবীর সাদা রং টা রঙিন কারুকাজে খচিত হবে!

ভোরবেলা উঠেই তার হাত ধরে বেরিয়ে যেও তার অদেখা মঙ্গল শোভাযাত্রাটা হয়তো তোমার হাত ধরেই হাটার জন্য তোলে রাখা আছে।

ভাবছো বৈশাখের এমনতরো প্রহরে কেন তোমাকে এভাবে লিখছি!! কি করবো বলো?বড্ড প্রথাগত,  সেকেলে বাঙ্গালী নারীরা হয়তো এমনই কল্পনা করতে ভালোবাসে। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির অমিলে নারীর অভিমান হয়, সে প্রচণ্ড খেয়ালী আবার কখনো প্রচণ্ড দরদী হয়ে উঠে। দিন গুনে, প্রহর পার করে যে তোমাকে নিয়ে বছর শুরু হওয়ার কথা ছিল ঘরের কোনে পড়ে হয়তো সে আগামী বছরের ফর্দ করতে বসেছে। আর অস্ফুট চিৎকার করছে,শুনতে পাচ্ছোওওওও,,,......আজ তুমি বরং না হয় ঘরেই থেকো।

কোন একদিন আমরা মুক্ত হবো,কাছাকাছি হবো বৈশাখী সাজে।হাতে হাত রেখে চেপে বসবো নাগরদোলায়, কিছুক্ষণ বাতাসে ভাসবো বিহঙ্গের মতো। একদিন আমাদের মান অভিমানের সব জরা দূরে ঠেলে দিয়ে আমরা হবো যুগলবন্দী।

ইতি,

অপরিচিতা

লেখিকা: কবি ও ফটোগ্রাফার।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence