নারীর সুরক্ষার দায়িত্ব যাদের, তারাই অসম্মান করলে কান্নারাও তুচ্ছের হাসি হাসে

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা
ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি সম্পাদিত

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’। ১৯০৯ থেকে ১৯১১ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে দিবসটি উদ্‌যাপন করা শুরু হয়। পরে তৎকালীন বামপন্থী শিবিরের সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোও দিনটি ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা শুরু করে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে দিবসটি উদ্‌যাপন করে আসছে। 

বর্তমানে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান প্রশংসনীয়। রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ নারী শিক্ষার্থীরা এই দিবসটি নিয়ে জানিয়েছেন তাঁদের ভাবনার কথা। তাদের কথাগুলো শুনেছেন—স্মৃতি আক্তার

একজন নারীই একটি সূর্য 

নারী দিবস আমাকে মনে করিয়ে দেয় মানবসভ্যতায় ইতিহাসের রচয়িতাদের। এ দিবস ই শুধু নয়, আমাকে ভাবায় প্রতিটা দিবস যে একজন নারীই একটি সূর্য। এরা শক্তি, এরা প্রেরণা তবে দিনশেষে দুর্ভাগ্য তাদেরই। যে পুরুষের প্রতি দেয়া হয়েছে নারীদের সুরক্ষার দায়িত্ব, তারাই যখন নারীকে অসম্মান করে; তখন কান্নারাও তুচ্ছের হাসি হাসে।

মহান রব নারীদের কোমল স্বভাবের করেছেন এবং তাদের দিয়েছেন বিশেষ মহত্ত্ব। সমাজের বেশিরভাগ পুরুষ তা স্বীকার করে না বরং নারী অধিকার ক্ষুণ্ন করে অহরহ। নারীদের প্রতি নির্যাতন করে তারা জানিয়ে দেয়, এ ধরায় তাদের থেকে নিকৃষ্ট পশু আর সৃষ্টি হয়নি। এই পশুদের উপযুক্ত বিচার এ সমাজ দিতে ব্যর্থ। এ দেশের আইন ব্যর্থ নারীদের সম্মান রক্ষায় একমাত্র স্রষ্টার বিধান ছাড়া কিছুই কার্যকর হবে না বলেই আমি মনে করছি।

একদিকে সগৌরবের ইতিহাস আর অন্যদিকে একরাশ হাহাকার নিয়ে আসে এই নারী দিবস। এই দিনটা যত জাঁকজমক দেখা যায় নারীদের জীবন তা নয়। তাই আমার কথা হলো, ৩৬৫ দিনই নারীদের আমরা সুরক্ষা ও সম্মান দেয়ার চেষ্টা করব এটাই হতে পারে নারী দিবসের প্রধান সফলতা। তবে কিছু নারী যে নিজেদের সম্মানটুকু বোঝে না, অকাতরে নিজেদের সস্তা বানিয়ে রাখে তারও ইয়ত্তা রয়েছে বৈকি। এদেরকে বলতে হয়, নারী জাতের কলঙ্ক।

তানজিলা আক্তার সুইটি 
রসায়ন বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ।

নারী এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যাবে দেশ

যাদের আলোকিত প্রাণের জ্বলে ওঠা,যাদের আলোকবর্তিকা আজও নারীদের প্রেরণা যোগায়, অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়তে শেখায়, সে সব মহৎ প্রাণদের প্রতি থাকবে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের বিনম্র শ্রদ্ধা।

নারীর জীবনে থাকে হাজারও বাঁধা, পরিবার কী ভাববে? সমাজের লোকে কী বলবে? এ সব বাঁধা পেরিয়ে নারী এগিয়ে যাক সগৌরবে, আপন মহিমায়। কারণ নারী এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যাবে দেশ, এগিয়ে যাবে জাতি। তাই সমাজের কঠিন অন্ধকারে যেন হারিয়ে না যায় কোনো নারীর স্বপ্ন, নারীরাই বিশ্বের জ্যাতি।

আয়শা সিদ্দিকা
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ।

নারীই নারীত্বের অংশীদার

আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত করতে প্রতিবছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ টিকে বেছে নেওয়া হয়। কারণ এ ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। নারী এই দুই অক্ষরের শব্দের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো ত্যাগ-তিতীক্ষা, কল্পনাহীন মায়া, সীমাহীন যত্ন, আকাশ সমান দুর্বলতা, অফুরন্ত ভালোবাসা এবং সমুদ্রের গভীরতা যতখানি ঠিক ততখানি ভয়। এ নারীই নারীত্বের অংশীদার, এই নারীই নিরাপত্তার বেড়াজাল, সহধর্মিণীর দাবিদার।

নারী কখনও মা , কখনও বোন, কখনও সহধর্মিণী। নারী একটি নাম যার রয়েছে সীমাহীন চরিত্র। এ অসীম বিশ্বকে সুন্দর, সুস্থ, সাবলীল, উন্নয়নশীল এবং গতিশীল করার পেছনে নারীর অবদান অনস্বীকার্য।

সাদিয়া আফরিন মৌ 
শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ।


সর্বশেষ সংবাদ