দেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পাবে শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসের স্বীকৃতি?
- এস এম আতিয়ার রহমান
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৯ PM , আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১০ PM
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা প্রেক্ষিত র্যাংকিং এখন আলোচিত বিষয়। বিশ্বের উন্নত দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গবেষণাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়মিত র্যাংকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তা প্রকাশ করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অনেক সময় হাজারের মধ্যেও আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান দেখা যায় না। তাই বলে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান কি এতোটা খারাপ? তা কিন্তু নয়।
সেটা বোঝা যায় বছরে কমপক্ষে বিশ থেকে পঁচিশ হাজার গ্রাজুয়েটদের উচ্চশিক্ষা লাভে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপসহ গমনের চিত্র থেকে। আবার তারা সেখানে গিয়ে সাফল্যের সাথে কোর্স সম্পন্ন করছে। আসলে র্যাকিংয়ের জন্য যেসব বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়, সেসব বিষয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সময়মতো ও সঠিকভাবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে কি না, গুগলসহ অন্যান্য সাইটে শিক্ষকদের গবেষণা নিবন্ধসহ প্রয়োজনীয় তথ্য হালনাগাদ থাকে কিনা-এমন অনেক বিষয় পিছিয়ে থাকার কারণ বলে অনেকে মনে করেন।
তবে আমাদের দেশে ইউজিসি বা বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল অথবা অন্য কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান এখনও সেভাবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের র্যাংকিং শুরু করেনি। অচিরেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে-এমন কথা কয়েক বছর ধরে শোনা যাচ্ছে।
প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা যায় যে, দেশে এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৬টি। এর মধ্যে ৩টিতে এখনও শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়নি। এমন জরিপ যদি কোনো সংস্থার দ্বারা পরিচালিত হতো যে, বাংলাদেশে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার ধারাবাহিক সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। নিঃসন্দেহে সেখানে প্রথমেই উঠে আসতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। কারণ, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যতো নেতিবাচক সংবাদ বছরে প্রকাশিত হয় তার মধ্যে সবচেয়ে কম হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। অপরদিকে নানা সাফল্যের সংবাদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে প্রথম সারিতে।
একটি বিশ্ববিদ্যলয়ের শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস বলতে যতোগুলো বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন তার প্রায় সবগুলোই বিদ্যামান রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেবল তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই এ বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন করেছে ব্যতিক্রম ধারা। আবার অনেক বিষয় রয়েছে যার শুরুটা হয়েছে এখান থেকে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ই দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বধ্যভূমির ওপর।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো রাজনৈতিক বা সরকারি সিদ্ধান্তে রাতারাতি স্থাপিত হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে খুলনাঞ্চলের আপামর মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল হিসেবে। একটানা প্রায় দু’বছরের দাবি ও নজিরবিহিন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে যখন খুলনা প্রায় অবরুদ্ধ ও বিচ্ছিন্ন নগরীতে পরিণত হয়, যখন কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়-এমন পরিস্থিতিতে ১৯৮৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার খুলনার গল্লামারীতে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে ৮৭ সালে ৪জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়। এ দিনটিই মূলত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বা প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে ধরা হয়। তবে জাতীয় সংসদে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯০’ পাস হয় একই বছরের ৩১জুলাই।
আরও পড়ুন: ডিপ্লোমা উত্তীর্ণরা কেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না
১৯৯০-১৯৯১ শিক্ষাবর্ষে মাত্র ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০জন শিক্ষার্থী নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। একই বছরের ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাকার্যক্রম উদ্বোধনের এ দিনটিতে পরবর্তীতে ২০০৪ সাল থেকে পালন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। শিক্ষাকার্যক্রমের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররাজনীতি মুক্ত। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা প্রথম ওরিয়েন্টেশনের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্ররাজনীতি, সন্ত্রাস ও সেশনজট মুক্ত রাখার যে শপথ নিয়েছিলো গত ৩৩বছর ধরে একইভাবে এখনও নবাগত শিক্ষার্থীরা তাদের ওরিয়েন্টেশনের দিনে একই শপথ নেয়। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা সে শপথ ভাঙ্গেনি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই সেশনজট। কখনও ছাত্র সংঘর্ষ হয়নি, প্রাণহানি ঘটেনি। ক্যাম্পাসে শোনা যায় না কোনো রাজনৈতিক শ্লোগান। এ উদ্দেশ্যে টানানো হয় না কোনো ব্যানার। ভবনের গায়ে নেই চিকা মারা। নেই শব্দ দূষণ। পরিচ্ছন্ন গ্রিন ক্লিন ক্যাম্পাস, কাগজের টুকরো প্রায় চোখেও দেখা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি স্কুল (অনুষদ) ও ২৯টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী এখানে অধ্যায়ন করছে। বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৬জন।
নিয়মিত ক্লাস গ্রহণের ক্ষেত্রেও এগিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এখানে পহেলা জানুয়ারি ক্লাস শুরু হয়, একই সাথে সকল ডিসিপ্লিনের পরীক্ষা, ফলাফল প্রকাশ এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল প্রদানের মাধ্যমে ২টি টার্ম এখানে শেষ হয়। এ ধারা সম্ভাবত দেশে আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুপাত ১:১২, শিক্ষকদের মধ্যে ৩৬ শতাংশের বেশি পিএইচডি ডিগ্রিধারী। ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাত ৫৪:৪৬। বিশ্বমানের এমন অনুপাত দেশের অন্যকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বলে অনুমিত হয় না।
একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার পর দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ও সেশনজটমুক্ত শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুণ্য রাখা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অর্জন ও স্বতন্ত্র সাফল্য। বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ, অস্থিরতা ও চাপের মধ্যেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচেতনতা এবং অতন্দ্র ভূমিকার কারণেই মূলত এ পরিবেশের ধারাবাহিকতা রক্ষা সম্ভব হয়েছে।
একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মনোভাব ও সহযোগিতা এবং দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় রাজনীতিক ও সামাজিক শুভেচ্ছা সবদিক থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পরিবেশ বজায় রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। কেবল শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশর দিক নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনেক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। বুয়েটের পরই ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স ক্রেডিট পদ্ধতি চালু হয়। দেশের মধ্যে অনুষদকে স্কুল এবং বিষয়ভিত্তিক বিভাগকে প্রথম ডিসিপ্লিন নামে চালু হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েই স্নাতক পর্যায়ে দেশে প্রথম নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা, ব্যবসায় প্রশাসন, বায়েটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেট্রনিক এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন চালু হয়। ঢাকার বাইরে স্থাপত্য ডিসিপ্লিন ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনও এখানে প্রথম চালু হয়। এছাড়া দেশের মধ্যে ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরই এখানে চালু হয়।
সুন্দরবন ও উপকূল নিয়ে বিশ্বের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যিালয়ে প্রথম স্থাপিত হয়েছে ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড স্টাডিজ অন দ্য সুন্দরবনস এন্ড কোস্টাল ইকোসিস্টেম (আইআইএসএসসিই)। দেশের একমাত্র সয়েল আর্কাইভ স্থাপিত হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বধ্যভূমি যাদুঘর। সম্প্রতি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে স্বতন্ত্র শিক্ষা ও গবেষণা তহবিল বা রিসার্চ এনডিওমেন্ট ফান্ড প্রথম চালু করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এসব বিভিন্ন দিক বিবেচনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন করেছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও সুনাম যে কারণে দেশ-বিদেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সমুজ্জ্বল করে তুলেছে। ধারাবাহিক শিক্ষা সাফল্য ও পরিবেশ ধরে রাখার পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরে শিক্ষার গুণগতমান এবং গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধির যে উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
২০২১ সালে করোনার পরিস্থিতির মধ্যেই চার মাস বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো উপাচার্যবিহীন। ফলে উন্নয়ন কার্যক্রমসহ অনেক কাজ সিদ্ধান্তের অভাবে পিছিয়ে পড়ে। এরপর নতুন উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ২৫ মে দায়িত্ব নেন শিক্ষক ও গবেষক প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা ও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি স্থবির শিক্ষাকার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু করা এবং মুখ থুবড়ে পড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সচল করতে সচেষ্ট হন। একই সাথে গবেষণার কাজ জোরদারের উদ্যোগ নেন। তাঁর একান্ত নিরলস প্রচেষ্টায় গত দুই বছরের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও ভৌত কার্যক্রমে সৃষ্টি হয়েছে গতিশীল অবস্থা।
দুই বছরের মধ্যে করোনার ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সার্বিক সহায়তা পেয়েছেন তিনি। সবাইকে নিয়ে চলার মানসিকতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয়েছে প্রাণচাঞ্চল্যমুখর কর্মপরিবেশ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর নেতৃত্বে এসময়ের মধ্যে অর্জিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম আউটকাম বেজড এডুকেশন (ওবিই) কারিকুলা প্রণয়ন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বমানের এই কারিকুলা অনুসরণ করে গত জানুয়ারি থেকেই শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়েছে। একজন একনিষ্ঠ গবেষক হিসেবে নতুন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিজ্ঞানীদের তালিকায় মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান অর্জন করেন।
শিক্ষকদের মধ্যে গবেষণা মনস্কতা বৃদ্ধি, শিক্ষক ছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ, প্রশিক্ষণসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক গুণগতমান অর্জনে আইকিউএসির সারাবছরব্যাপী প্রশিক্ষণ,ওয়ার্কশপ দক্ষতা উন্নয়নে সবিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য কাজ করছে আইসিটি। অনলাইনে শতভাগ ভার্তি, ডি-নথি ব্যবস্থা প্রচলনসহ ইতোমধ্যে এসব কার্যালয়ের সাফল্য উল্লেখযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রবিষয়ক এবং শারীরিক শিক্ষা চর্চা বিভাগের বছরব্যাপী কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত করে রাখে।
বর্তমান উপাচার্যের কর্মমেয়াদের দুই বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম কেবল জোরদারই হয়েছে তা নয়, এক্ষেত্রে নানামুখী অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। একই সময়ে ৬টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বার্ষিক রাজস্ব ও উন্নয়নসহ গবেষণায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থবরাদ্দ বেড়েছে, ল্যাবে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপিত হয়েছে, গবেষণা প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে এবং বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি হচ্ছে। হাই-ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে শিক্ষকদের গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যা বেড়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডিজকে যুগোপযোগী করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণা ল্যাবরেটরির আধুনিকায়নের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে পৃথক রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টার। সর্বিক প্রচেষ্টায় দুবছরের মধ্যে ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নে ১২তম থেকে ৪র্থ স্থানে উঠে এসেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বমানের শিক্ষাদানের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চলছে । গবেষণাকেই উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ব্র্যান্ডিং হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান। শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্বমান অর্জনের অভিলক্ষ্যই এখন সকল কাজের মুখ্য হয়ে উঠেছে। দুইএক বছরের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আরও অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অর্জন করে অভীষ্টে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে এমনটাই সবার প্রত্যাশ।
লেখক: পরিচালক (পিআরএল), জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যাল।