ডিপফেক প্রতিরোধে নিরাপত্তা নীতি ও প্রযুক্তিগত প্রশাসন উন্নত করা জরুরি

আহমেদ কাউছার
আহমেদ কাউছার  © টিডিসি ফটো

সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি নির্ভর মানুষের অস্তিত্বের নিরাপত্তা ঝুঁকি বহুগুনে বাড়িয়েছে প্রযুক্তির নতুন সংস্করণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। দেশের সাইবার নেরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এআইকে নিয়ন্ত্রণও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

সাইবার নিরাপত্তা, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও এর নিয়ন্ত্রণে কার্যকর প্রযুক্তিগত উন্নতিসহ সার্বিক বিষয়ে দ্যা ডেইলে ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন স্টিভেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পিএইচডি গবেষক ও আমাজনের সাবেক এপ্লাইড সাইন্টিস্ট (মেশিন লার্নিং) আহমেদ কাউছার। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. নূর এ আলম নুহাশ-

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বর্তমানে যে অবস্থানে আছে তা দেশের সাইবার নিরাপত্তায় কেমন প্রভাব ফেলছে?
আহমেদ কাউছার: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বর্তমানে বিশ্বজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হিসেবে উঠে এসেছে, এবং সাইবার নিরাপত্তা সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। সাইবার নিরাপত্তা প্রণালীগুলিতে এআই নতুন দিক তৈরি করতে সাহায্য করছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্ষেপ ণে স্বল্পমূল্যে ও সহজেই বিস্তৃত হয়ে উঠছে। এই প্রযুক্তির সাথে সাথে নতুন সাইবার ঝুঁকির চোখ তৈরি হচ্ছে। 

সাইবার হ্যাকিং এবং সাইবার অপরাধের মতো নিরাপত্তা ঝুঁকি সংক্ষেপণ ও প্রতিরোধে এআই এর সাইবারনিরাপত্তা প্রণালীগুলি সাহায্য করতে পারে। এই এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকারদের ব্যাপ্তি ও অস্বাভাবিক সাইবার ক্ষমতা চিহ্নিতের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। 

অনৈতিকভাবে একজনের ভিডিও বা ছবি অন্যের ভিডিও বা ছবিতে বসিয়ে বানানো প্রতারণামূলক ডিপফেক চিহ্নিতে এবং অপরাধী নিরাপত্তা প্রণালীতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে এআই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও উদ্ভাবন সাহায্য করবে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলো অপরাধীদের প্রতিরোধ নেওয়ার সাথে সাথে প্রাথমিক সাইবার হ্যাক চিহ্নিতকরণে সাহায্য করতে পারে।

তবে, এআই সাইবারনিরাপত্তা প্রণালীর নিষ্পাদনে সঠিক নিরাপত্তা নীতি এবং আইনের উন্নতকরণ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে এবং নৈতিক দিকে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সাইবারনিরাপত্তা প্রণালী তৈরি করার জন্য প্রযুক্তির সাথে সাথে নিরাপত্তা নীতি এবং নতুন আইনের সাথে মিলিয়ে যেতে হবে, যাতে নতুন সাইবার ঝুঁকির সহায়ক প্রযুক্তিগুলো বেশি সামর্থ্য তৈরি করতে পারে এবং প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা নীতি নোটিশবদ্ধ ও প্রভাবশালী হয়ে উঠে।

দ্যা ডেইলে ক্যাম্পাস: এআই এর অপ্রতিরোধ্য নবায়ন যত দ্রুত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে তার সাথে তাল মিলিয়ে আইন বা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার করে একে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে কিনা?
আহমেদ কাউছার: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এর অপ্রতিরোধ্য নবায়ন স্থিতি এখন প্রচুর চিন্তা এবং উদ্যোগের কারণ হয়ে দাঁড়েয়েছে। সেই সঙ্গে এটি সাইবার নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এআই ব্যবহার করে ক্রিমিনাল বা অপরাধীরা নিরাপত্তা সংক্ষেপণে নতুন পথ খুঁজে পেতে পারে  এবং এটির সাথে সাথে প্রযুক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়ে উঠছে।

এআই ব্যবহারের প্রতিরোধ করতে, নিরাপত্তা প্রণালীগুলি অস্বাভাবিক ব্যবহারের নতুন ধরণের সাইবার ঝুঁকি চিহ্নিত করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা প্রণালীগুলি এআই দ্বারা সাইবার হ্যাকিং এবং ডিপফেকের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার চিহ্নিত করতে পারে এবং এই প্রযুক্তিগুলির সম্পর্কে সাক্ষরতা তৈরি করতে পারে। সেই সঙ্গে আইন এবং নিরাপত্তা নীতি সংশোধন করা হতে পারে যাতে সাইবার অপরাধকে সহনীয় ও জরুরি কার্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এটি আরও প্রাথমিক ও বিস্তারিত নিরাপত্তা নীতি, নতুন আইন প্রণয়ন, এবং সাইবার আইনের প্রযুক্তিগত সংশোধনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

এআই এবং ডিপফেক এর অপ্রতিরোধ্য নবায়ন নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জের সাথে সাথে সঠিক নিরাপত্তা নীতি, আইন এবং প্রযুক্তিগত প্রশাসনের উন্নত করা জরুরি। এই প্রযুক্তিগুলির উচ্চাকাঙক্ষী ব্যবহার সাথে সাথে নিরাপত্তা নীতি এবং নতুন আইনের সাথে মিলিয়ে যেতে হবে, যাতে নতুন সাইবার ঝুঁকির সহায়ক প্রযুক্তি বেশি সামর্থ্য তৈরি করতে না পারে এবং প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা নীতি নোটিশবদ্ধ ও প্রভাবশালী হয়ে উঠে।

দ্যা ডেইলে ক্যাম্পাস: সম্প্রতি বেশ কিছু ভুয়া আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে এ আই ব্যবহার করে। এ ধরণের সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় কার্যত কোনো সমাধান আছে কিনা?
আহমেদ কাউছার: ভুয়া আপত্তিকর ভিডিও, যা ডিপফেক বলা হয়, বর্তমানে সাইবার অপরাধের একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং এই চ্যালেঞ্জের সাথে সাথে নতুন প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়ার উন্নতি হচ্ছে। ডিপফেক তৈরি করা সহজ হলেও, এই প্রযুক্তির দ্বারা তৈরি ভিডিওর প্রাকৃতিক দিক ব্যক্ত হয় না। এই প্রযুক্তির সাথে সাথে ডিপফেক নির্ঝরণের জন্য নতুন প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়ার উন্নতি হচ্ছে যার সাথে সাথে ডিপফেক চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে।

সম্প্রতি, ডিপফেকের বিপরীতে ডিপফেক নির্ঝরণে নতুন প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে এবং এই প্রযুক্তি প্রাথমিক স্তরে চিহ্নিত করতে সাহায্য করছে। এই প্রযুক্তিগুলি ডিপফেক চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে এবং তা ব্যাক্তিগত ও পেশাদার প্রযুক্তিগত ব্যবহারের জন্য সাক্ষরতা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

ডিপফেক চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়ার মধ্যে ব্যতিক্রম থাকতে পারে। যেমন: স্বরের বৈশিষ্ট্য নিশ্চিতকরণ এবং ডিপফেক তৈরির সময় অস্বাভাবিক স্বরবৈশিষ্ট্য সংশ্লিষ্ট হতে পারে যেগুলি প্রক্ষিপ্ত হতে পারে। প্রযুক্তি স্বরের বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে এবং স্বরের অস্বাভাবিকতা চিহ্নিত করতে পারে।

চিত্র বা ভিডিওর গুণগত বৈশিষ্ট্য নিশ্চিতকরণ: ডিপফেক চিহ্নিত করার জন্য ডিপলার্ণিং (Deep Learning) এবং কম্পিউটার ভিশন ব্যবহার করা হয়, যা চিত্র বা ভিডিওর গুণগত বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। 

ভিডিওর অস্বাভাবিক দলীয় আচরণ: ডিপফেক ভিডিও তৈরির সময় অস্বাভাবিক দলীয় আচরণ সংশ্লিষ্ট হতে পারে। এটি প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিপফেক চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে।

নতুন ডিপফেক তৈরির সাথে সাথে নতুন প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়া তৈরি হচ্ছে, যার সাথে সাথে নিরাপত্তা প্রণালীগুলি উন্নত হচ্ছে তাতে ডিপফেক চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে এবং প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা সংক্ষেপণে সামর্থ্য বাড়াচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence