ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১০ টাকার টিকেট দুপুরে হয়ে যায় ১৫০ টাকা!

দালাল চক্রের খপ্পরে চিকিৎসাপ্রার্থীরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ।  © সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে দুপুরের দিকে এক রোগী চিকিৎসা নিতে এসে টিকেট সংগ্রহে ব্যর্থ হন। এ সময় পাশ থেকে এক নারী তাকে বলেন, টিকেট পাওয়া যাবে—তবে ১৫০ টাকা লাগবে। প্রথমে ওই রোগী ১০০ টাকা দিতে চাইলে সেই নারী তাতে রাজি হননি। শেষে রোগী বাধ্য হয়েই ১৫০ টাকা দেন। এরপর ওই নারী তাকে চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে নিয়ে গিয়ে টিকেটের ব্যবস্থা করে দেন। গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ঢামেকের বহির্বিভাগে এ ঘটনা চোখে পড়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস প্রতিবেদকের।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ সর্বদা রোগীতে পরিপূর্ণ থাকে। সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজারো মানুষ চিকিৎসার আশায় ছুটে আসেন এখানে।

দুপুরের দিকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বহির্বিভাগে এক ব্যক্তি টিকেট পেতে ব্যর্থ হলে পাশেই দাঁড়ানো এক নারী তাকে বলেন, ‘আপনারা টিকেট পাবেন তবে গুনতে হবে ১৫০ টাকা।’ কিন্তু সেই ব্যক্তি জানান, তিনি ১০০ টাকা দিতে পারবেন। তখন ওই নারী বলেন, ‘এখানে কোনো ডাক্তারই নেই, ১৫০ টাকা দিলে আমি টিকেটের ব্যবস্থা করে দিতে পারব।’

ওই মহিলা আরও বলেন, চা পান খাইতে হয় তো আমাদের।’ মহিলার কথায় অনেকটা নিরুপায় হয়েই ওই ব্যক্তি ১৫০ টাকা দেন। এরপর সে নারী তাকে চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে নিয়ে যান এবং টিকেট সংগ্রহ করে দেন।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানের বক্তব্য নিতে গেলে তার সাক্ষাৎ মেলেনি। পরে সহকারী পরিচালকের কাছে গেলেও তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজী হননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢামেকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগে যেসব অনিয়ম দেখা যায় তার পেছনে মূল ভূমিকা রাখে দালালচক্র। তারা বিভিন্ন ছুতোয় রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে থাকে—কখনো টিকেট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে—কখনো আবার ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা জরুরি চিকিৎসা সুবিধার আশ্বাস দিয়ে। এদের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে সক্রিয়।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই দালালদের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযান চালানো হয়েছে। অনেককে আটকও করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এদের অনেকে এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।’


সর্বশেষ সংবাদ