বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ পুনর্বহালের দাবি

বাংলাদেশী পাসপোর্ট
বাংলাদেশী পাসপোর্ট  © সংগৃহীত

ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে উত্তাল ঢাকার রাজপথ। ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে রাজধানীর মিরপুর-১০ গোল চত্বরে আয়োজিত এক বিক্ষোভে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ বা ইসরায়েল ব্যতীত বিশ্বের সব দেশে প্রবেশযোগ্য চিহ্ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের কোন প্রচেষ্টা আমাদের জাতিসত্তা, বিশ্বাস এবং নৈতিক অবস্থানের সঙ্গে যায় না। স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে ইহুদিবাদী আগ্রাসনকারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের গোপন বা প্রকাশ্য সম্পর্ক মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই আবারও পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ চিহ্ন ফিরিয়ে আনা হোক।

সমাবেশে মাসউদ আরও বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্র নয়, একটি হত্যাকাণ্ডের প্ল্যাটফর্ম। এই অবৈধ রাষ্ট্রটি গত কয়েক মাসে ফিলিস্তিনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের বড় অংশই নারী ও শিশু। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। বরং বিশ্বব্যাপী নিরবতা দেখেই ইসরায়েল আরও উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।

তিনি আরব বিশ্বকে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দানবদের প্রতি তেল সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই আগ্রাসীদের অর্থনীতি বন্ধ না করলে ফিলিস্তিনের কান্না থামবে না। ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইয়াহুদিদের সব পণ্য বর্জন করতে হবে। এটা এখন শুধু প্রতিবাদ নয়, ঈমানি দায়িত্ব।

সমাবেশে উপস্থিত অন্য বক্তারাও একই সুরে কথা বলেন। তারা বলেন, মুসলিম বিশ্ব যদি ঐক্যবদ্ধ হতো, তাহলে ফিলিস্তিনে এত প্রাণ হারাতে হতো না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে জাতিসংঘের মতো সংস্থাগুলোর।  

বক্তারা আরও বলেন, ফিলিস্তিন এখন আর শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি এক বিপন্ন মানবতার প্রতীক। এই মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ানো মানেই সাম্রাজ্যবাদ ও নিষ্ঠুরতা বিরোধী অবস্থান নেওয়া।

বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা নুরুল ইসলাম নাঈম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি নিজামুদ্দিন, ডা. মুজিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, যুবনেতা মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ প্রমুখ। 

তারা বলেন, ইসরায়েলি পণ্য শুধু বর্জন নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের অবস্থান আরও দৃঢ়ভাবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরা সম্ভব।  

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে ৬ নম্বর হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। হাতে ছিল ফ্রি প্যালেস্টাইন, ইসরায়েলি প্রোডাক্ট বর্জন করো, গণহত্যার বিচার চাই—এই ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।

সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে প্রাণ পায় কর্মসূচিটি। বক্তারা জানান, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে দেশব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence