অভাব দমাতে পারেনি বাশারকে, ঢাবি-রাবির পর চান্স পেলেন বুয়েটেও

 আবুল বাশার
আবুল বাশার  © ফাইল ছবি

হতদরিদ্র ঘরের সন্তান আবুল বাশার। বাবা পেশায় একজন দরজি। কিন্তু অভাব দমাতে পারেনি আবুল বাশারের পরিশ্রম ও মেধা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। 

গত ৩০ জুন বুয়েটের ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নেভাল আর্কিটেক্ট অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বাশার এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১ হাজার ৭০২তম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ষষ্ঠতম স্থান অর্জন করেন।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ওয়াপদা গেট খলিফাপাড়া এলাকার তসলিম উদ্দীন ও বিউটি বেগম দম্পতির ছেলে আবুল বাশার। তার বাবা পেশায় একজন দরজি। বাবার সেলাইয়ের কাজের স্বল্প আয় দিয়েই চলে তার মা-বাবা-বোনসহ চারজনের পরিবার।

বাশার স্থানীয় সানফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসসি ও এসএসসিতেও জিপিএ-৫ রয়েছে তার। আগে থেকেই বাশারের স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়াশোনা করবেন। অভাব-অনটন আর সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।

আবুল বাশার বলেন, ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে উঠেছি। মা-বাবাকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে দেখেছি। সকাল হলে বাবা চলে যান কাজে, আর মা সংসারের কাজে ব্যস্ত। অর্থাভাব ও শত কষ্টের মাঝেও নিজেকে প্রস্তুত করি। ভাবতাম একদিন বুয়েট থেকে প্রকোশলী হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব। মা-বাবার দুঃখ-কষ্ট দূর করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়ে সেই স্বপ্নের পথে এগিয়েছি।

আরও পড়ুন: শোক সভার বিরোধিতা নয়, রাজনীতি পুনরুত্থানের শঙ্কা ছিল শিক্ষার্থীদের

তিনি আরও বলেন, আমার সাফল্যের পেছনে শিক্ষক ও মা-বাবার অবদানই বেশি। অনেক শিক্ষক আমাকে এ পর্যায়ে আসতে অনেক সহযোগিতা করছেন।

বাশারের মা বিউটি বেগম বলেন, আমার ছেলের সাফল্যে আমরা গর্বিত। অনেক কষ্ট করেছে আমার ছেলে। ছোটবেলায় ও কাগজ কেটে বাড়ি বানাত, উড়োজাহাজ দেখলেই দৌড়ে ঘর থেকে বের হতো। বলত, বড় হয়ে আমি ইঞ্জিনিয়ার হব। ছেলের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় জীবনের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গেছি।

সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান বলেন, আবুল বাশারের এ সাফল্যে আমরা শিক্ষকরা অনেক খুশি ও গর্বিত। ও শুধু পড়ালেখায় নয়, সব দিক দিয়েই খুব ভালো ছেলে। 


সর্বশেষ সংবাদ