তিন মাসেও নিয়োগ হয়নি প্রভোস্ট, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

শেখ রাসেল হলের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
শেখ রাসেল হলের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ  © টিডিসি ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শেখ রাসেল হলে প্রভোস্টের পদত্যাগের পর প্রায় তিনমাস পার হলেও এখনও নিয়োগ দেয়া হয়নি নতুন প্রভোস্ট। ফলে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম না চলাসহ সুষ্ঠু আবাসিক পরিবেশ নিশ্চিতের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে সমস্যা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ২১ জুন হলের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের নিকট আবেদন জানিয়েছিলেন। ওই সময়ে উপাচার্য তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন ৪-৫ দিনের মধ্যেই নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু একমাস পার হয়ে গেলেও সেই আশ্বাস বাস্তবায়ন করেননি উপাচার্য।

সরেজমিনে শেখ রাসেল হলে গিয়ে দেখা যায়, হলটির প্রায় সকল ওয়াশরুম এবং বেসিন অপরিচ্ছন্ন, এছাড়া হলটির চারপাশেও যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে আছে। এসময় শিক্ষার্থীরা জানান কয়েকদিন আগে অবস্থা আরও খারাপ ছিলো। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশের পর ক্লিনাররা অধিকাংশ জায়গা পরিষ্কার করেছেন।

আরও পড়ুন: অনার্সে এক, মাস্টার্সে আরেক বিষয় পড়া নিয়ে ভাবছে ঢাবি

এ বিষয়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. মাসুকুর রহমান বলেন, ‘কিছু দিন আগেও পুরো ক্যাম্পাসের মধ্যে নতুন হল হিসেবে সবচেয়ে সুন্দর পরিবেশ ছিলো এই হলের। সংস্কৃতিক চর্চা, জাতীয় দিবস পালন, ডিবেটিং সহ বিভিন্ন সময়ে ক্রীড়ানুষ্ঠান আয়োজনের দিক থেকে এই হল ছিলো অন্যতম। সবসময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মচারীতে মুখরিত থাকতো হলটি। কিন্তু প্রভোস্টহীন শেখ রাসেল হলে উৎসবমুখর পরিবেশ তো দূরের কথা, নূন্যতম স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিয়ে বসবাস কারাটাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।‘

বর্তমান দূরাবস্থা উল্লেখ্য করে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট না থাকায় হলের বিভিন্ন অসঙ্গতি তদারকি করার  মানুষও নেই। কর্মচারী থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে হলের সবকিছুতে শোচনীয় অবস্থা বিরাজ করছে। ওয়াশরুমগুলো ব্যাবহারের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে উঠেছে। আমরা বাঙালি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারণে সোচ্চার হলে, চাপে পড়ে দীর্ঘদিন পরে হলেও ক্লিনারদের দেখা মেলে। কিন্তু বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপাশের ভয়াবহ অবস্থা। ওয়াশরুম ব্যাবহার করা তো দূরের কথা, আশেপাশে গেলেও দুর্গন্ধে টিকে থাকা যায়না।’

আরও পড়ুন: ছিনতাইকারীকে একাই শায়েস্তা করলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী

আগামী সপ্তাহেই প্রভোস্ট নিয়োগের দাবি জানিয়ে মাসুকুর রহমান বলেন, ‘আমার চাই, বার বার প্রতিশ্রুতি না দিয়ে আগামী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের একজন দায়িত্বশীল প্রভোস্ট দেওয়া হোক। নতুবা শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করে নিবে।’

এ বিষয়ে হলের সহকারী প্রভোস্ট মো. হাসেম রেজা বলেন, “প্রভোস্ট না থাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত সহ কোনো কিছু নষ্ট হলে রিপেয়ার করা এবং ডাইনিং চালু রাখতে যে ‘মেইনটেইনান্স কস্ট’ প্রয়োজন হয় সেটি আমরা উত্তোলন করতে পারি না। গত কয়েকমাস আমরা ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করে এগুলো চালিয়ে নিয়েছি। এছাড়া, প্রভোস্ট থাকলে তিনি সকলকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে কাজ করতে পারেন কিন্তু এখন সেটিও সম্ভব হচ্ছে  না।’

কর্মচারীদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘আমাদের হলের কর্মচারীরা বিশেষ করে ক্লিনাররা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। এর ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’

প্রভোস্ট নিয়োগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বশেমুরবিপ্রবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। হয়ত শীঘ্রই সিদ্ধান্ত আসবে।’


সর্বশেষ সংবাদ