ড্রয়িং-ডিজাইন জটিলতায় বন্ধ বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটক নির্মাণ

ড্রয়িং-ডিজাইন জটিলতায় বন্ধ বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটক নির্মাণ
ড্রয়িং-ডিজাইন জটিলতায় বন্ধ বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটক নির্মাণ  © সংগৃহীত ছবি

আমি এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছি কিন্তু আমার ১৭ বছরের কর্মজীবনে কখনও এমন ভোগান্তিতে পড়িনি। আমাদেরকে ড্রয়িং-ডিজাইন সবকিছু বুঝিয়ে দিলে আমরা ছয়মাসের মধ্যে গেটের কাজ শেষ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা জিএলের পর আর কোনো ড্রয়িং-ডিজাইন বুঝে পাইনি, এই ডিজাইন সংক্রান্ত জটিলতা এবং ডিজিটাল সার্ভে জটিলতায় প্রায় তিন মাস ধরে গেটের কাজ বন্ধ।- বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটক নির্মাণ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এভাবেই বলছিলেন প্রধান ফটক নির্মাণের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার নূর আলী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটকের কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে ৷ এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র জিএলের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুরু থেকেই গেটের কাজ ধীরগতিতে চলছিলো আর বর্তমানে এই কাজ পুরোপুরি বন্ধ।

আরও পড়ুন: জাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ঘোষণা আসছে রাতেই

ক্ষোভ প্রকাশ করে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক চৌধুরী তপু বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার ১০ বছর পর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিলো সেই মুহূর্তে আনন্দিত হয়েছিলাম। স্বপ্ন দেখেছিলাম মেইন গেট হওয়ার পাশাপাশি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন অবকাঠামোগত কাজগুলোর গতি ত্বরান্বিত হবে ও খুব দ্রুত সুন্দর পরিপূর্ণ বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাস দেখবো। কিন্তু তিনমাস কাজ বন্ধ থাকার ফলে এটির কাজ কবে শেষ হবে বা আদৌ শেষ হবে কিনা এ নিয়ে এখন সন্দিহান আছি।

তিনি আরও বলেন, কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারে না ও জায়গাটা দেখতেও খুবই বিশ্রী লাগে। তাই দায়িত্বশীলদের নিকট দাবি থাকবে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যেন কম সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করা হয়। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তৈরিকৃত কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদনে দেখা যায়, আরডিপিতে মেইন গেটের জন্য বরাদ্দ ছিলো ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা এবং কাজী মাহবুবুর রহমান প্রায় ২ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা মূল্যে দরপত্র ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত গেট নির্মাণের কাজে অগ্রগতি হয়েছে ২২% এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিনমাসে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪%।

আরও পড়ুন: টিকা না নিলে স্কুলে যেতে পারবে না শিক্ষার্থীরা

কত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে গেট নির্মাণের দায়িত্বে থাকা নূর আলী বলেন, আমাদের দিক থেকে কোনো ধরনের অবহেলা নেই। এমনকি ড্রয়িং-ডিজাইন সংক্রান্ত জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা উপাচার্য বরাবর আবেদনপত্রও দিয়েছি। আমাদের ড্রয়িং-ডিজাইন পুরোপুরি বুঝিয়ে দিলে আমরা ৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো কিন্তু যেভাবে চলছে এভাবে চলতে থাকলে ১০ বছরেও কাজ শেষ হবে না।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। এখানে সবকিছু এভাবেই চলে। ১৮ মাসে বছর হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। কনসালটিং কোম্পানি, ইঞ্জিনিয়ার সকলেই কাজে ঢিলামি করে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করার।


সর্বশেষ সংবাদ