চুয়েটে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের মাসব্যাপী পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু

চুয়েটের বাস্কেটবল মাঠে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়
চুয়েটের বাস্কেটবল মাঠে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়  © টিডিসি

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বাস্কেটবল মাঠে আয়োজিত হয়েছে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। গতকাল সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রীতি খেলার আয়োজন করা হয় এবং উপহার হিসেবে সবাইকে একটি করে পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়।

প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়নের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে প্রকল্পটির বিভিন্ন পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। মাসব্যাপী পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এই পাটের ব্যাগ পুনর্ব্যবহার করতে এবং নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া পেজে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করা হয়, যার মাধ্যমে ডিসকাউন্ট কুপন অর্জনের সুযোগ দেয়া হয়। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, চুয়েট ক্যাম্পাসের নির্বাচিত কিছু দোকানে পাটের ব্যাগ কেনার সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীরা ব্যাগ ক্রয় করে সেটি পুনর্ব্যবহার করার ছবি নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপলোড করলে তারা পুরস্কার (ডিসকাউন্ট কুপন) পাওয়ার সুযোগ পাবেন, যা টেকসই অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন: ১০ হাজার কোটির বিশ্ববিদ্যালয় এখন ৮৩৯ কোটি

ইতোপূর্বে এ প্রকল্পের পক্ষ থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী হলগুলোয় এবং আবাসিক এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হার নির্ণয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে প্লাস্টিকের ব্যাগের বিপরীতে পাটের ব্যাগের ব্যবহারে অনুপ্রাণিত করতে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলমান পরীক্ষামূলক পর্যায়টি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়নের একটি কার্যকর পাইলট মডেল হিসেবে কাজ করবে। এটি চুয়েট কমিউনিটিতে পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক অধ্যাপক ড. মোছা. ফারজানা রহমান জুথী এবং বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আসিফুল হক। পাশাপাশি প্রকল্প প্রতিনিধি হিসেবে জার্মানির বাউহাউস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপস্থিত ছিলেন দুইজন জার্মান প্রতিনিধি সেন্তা রোজমেরি বার্নার এবং ফিলিপ লোরবার (সাইন্টিফিক কো অর্ডিনেটর, এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রজেক্ট)।

আরও পড়ুন: চবিতে ভর্তি: প্রবেশপত্র ডাউনলোডের সূচি প্রকাশ

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম হুমকির সম্মুখীন। প্লাস্টিক শুধু আমাদের না বরং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিক দূষণ পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতা তৈরী করছে, প্রাণী এবং মানুষের স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করছে। আমরা যদি প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারি তাহলে তা আমাদের টেকসই ভবিষ্যত গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হিসেবে কাজ করবে।’

উল্লেখ্য, এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পটি জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর এনভায়রনমেন্ট, নেচার কনসারভেশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেফটির (বিএমইউভি) অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ