প্রাথমিকের বই লিখেও সম্মানী পাননি লেখকরা
- রায়হান উদ্দিন
- প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৭ PM , আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১২ PM

পতিত আওয়ামী লীগের শাসনামলে পাঠ্যক্রম সংশোধন ও পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বই লেখা হলেও বাদ পড়ে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি বই লেখার কাজ। তবে ২০২৩-এর শেষ দিকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি বই লেখার কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ দুই শ্রেণির বই লেখার কাজ করেন বিশেষজ্ঞরা। ২ শ্রেণিরর বই লেখার কাজ শেষ করে ২০২৪-এর প্রথম দিকে এনসিটিবির কাছে জমা দেওয়া হয়। তবে প্রায় দেড় বছর হয়ে গেলেও লেখকদের এখনো দেওয়া হয়নি কোন অর্থ সম্মানী।
২০১৯ সালে শিক্ষাক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। আর সেসময় প্রাথমিকের শিশুদের বোঝা কমাতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের নতুন পাঠ্যক্রমের বই হাতে তুলে দিতে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন করা হয়।
লেখক সম্মানী পাননি জানিয়ে লেখকদের অভিযোগ, একটি বই নিয়ে কাজ করতে প্রায় ৪-৭ মাস সময় লাগে। পরিশ্রমের তুলনায় দেওয়া হয় সামান্য সম্মাননা। এ অর্থ পেতে লাগে দীর্ঘ সময়। সব মিলিয়ে লেগে যায় প্রায় ২ বছর। কারণ অফিসিয়াল জটিলতায় এত দীর্ঘসূত্রিতা হয়ে থাকে। অথচ বই লেখার কাজটি করতে রাতদিন পরিশ্রম করতে হয় লেখকদের। বই জমা দেওয়ার পরপরই বা খুব সময়ের ভেতর টাকা দিয়ে দেওয়ার দাবি লেখকদের।
আরও পড়ুন: প্রদর্শক নিয়োগের ফল নিয়ে যা জানালেন মাউশি ডিজি
জানা গেছে, ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১-এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবই সরবরাহের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে সেসময় প্রাথমিকের ৩টি শ্রেণির বই লেখা হলেও বাদ যায় দুটি শ্রেণির বই লেখার কাজ। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই ২০২৩-এর শেষ দিকে দুটি শ্রেণির বই লেখার কাজ শুরু হয়, আর শেষ হয় ২৪-এর প্রথমদিকে এবং সেসময়ই বইগুলো জমা দিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ২০২১-এর মাধ্যমিকের সব শ্রেণির বই সংস্কার বা লেখার কাজ হলেও সেসব বইয়ের লেখকরা এখনো পাননি কোন সম্মানী। এদিকে প্রাথমিকের বই নিয়ে যে বিশেষজ্ঞরা কাজ করেন তাদের প্রতি জনকে দেওয়া হয় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। আর মাধ্যমিকের লেখকরা পান প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশেষজ্ঞ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘একটি বই লিখতে গিয়ে আমাদের পরিশ্রম কেউ দেখতে পায় না। এমনও হয়ে থাকে যে, রাত ২/৩টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। যে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় তা পরিশ্রমের তুলনায় খুবই সামান্য। এ টাকা পেতে আবার প্রায় দেড় বছর অপেক্ষা করতে হয়, এটা ঠিক না।’
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি মাত্র এনসিটিবিতে যোগদান করেছি। ২০২১-এর মাধ্যমিকে লেখকদের সম্মানী না পাওয়ার বিষয়টি জানি। তবে সর্বশেষ কী অবস্থা তা জানি না। এ ছাড়াও প্রাথমিকের লেখকদের সম্মানী না পাওয়ার বিষয়টি জানি না। জেনে আপনাকে জানাবো।’