ঢাবি শিক্ষকের গবেষণা
গ্রামের ৩০% শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই
- ইরফান এইচ সায়েম
- প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:২৩ AM , আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫৭ AM
দেশের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। অর্থাৎ ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীই এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে থেকে গেছে। সম্প্রতি পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
জানা যায়, গ্রামাঞ্চলের মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে জানতে গত বছরের শেষের দিকে দেশের পার্বত্য অঞ্চলের বাইরে ৬০টি জেলায় একটি জরিপ চালায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)। এজন্য ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর—এ তিন মাসে ৬ হাজার ৫০০ পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করে গবেষক দল। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ড. মোহাম্মাদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। ওই জরিপেই শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সেবা এ দুরবস্থার চিত্র উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কভিড পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সেবার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে বহুগুণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখন অনলাইনে পাঠদান দিচ্ছেন অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার ক্ষেত্রে বাড়ছে বৈষম্য।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারনেট প্রাপ্তি, ব্যবহার অনেকাংশেই নির্ভর করে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর। যেসব পরিবারের মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা বা তার ওপরে, তারা সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট সুবিধাপ্রাপ্ত। এ ধরনের ব্যক্তিদের ৭৪ শতাংশই ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে। আবার যাদের আয় ২০ হাজারের বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের কোনো ধরনের আয়-ব্যবধান নেই। অর্থাৎ গ্রামে ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহারের জন্য পরিবারপ্রতি বিশ হাজারের বেশি টাকা উপার্জন করা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ড. মোহাম্মাদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, গবেষণা থেকে আমরা দেখতে পাই, শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সবক’টি খাতেই ব্যাপক হারে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে। শিক্ষার্থীর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ যদি ইন্টারনেট ব্যবহারের বাইরে থাকে, তার মানে দাঁড়ায় তারা অনলাইনের পাঠদানসহ যাবতীয় ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি সুবিধা প্রণয়ন ও অনুশীলন, ইন্টারনেট-সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ রাখলে ‘ডিজিটাল বৈষম্য’ দূর করা সম্ভব।