সেপ্টেম্বরেও খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহেই

  © ফাইল ফটো

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরুর পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এবং সংক্রমণ এড়াতে ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। তবে সেপ্টেম্বরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে। ইতোমধ্যে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকেও সে ব্যাপারে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান করোনার কারণে বন্ধ ছিল বা কার্যক্রম সীমিত ছিল। তবে চলতি মাসে এসে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কিনা তা জানার আগ্রহ রয়েছে শিক্ষাক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। তবে করোনা পরিস্থিতি এখনও খারাপ পর্যায়ে থাকায় স্কুল খোলার বিপক্ষে মত দিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এ অবস্থায় সেপ্টেম্বরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। রোববারই (২৩ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। করোনার কারণে চলতি বছর পিইসি বা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নেয়ার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’

একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। পরিস্থিতি অনুকূলে এলেই সরকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই চিন্তিত। তাই এ সময় শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহবান জানান ওবায়দুল কাদের।

সবমিলিয়ে সেপ্টেম্বরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলে মোটামুটি নিশ্চিত শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পুরোটাই বন্ধ থাকতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া অভিভাবকদের সিংহভাগই তাদের সন্তানদের এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে প্রস্তুত নন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তারা মনে করছেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনো স্কুল খোলার পক্ষে সহায়ক নয়।

এদিকে করোনার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি নিয়ে চলতি সপ্তাহেই নতুন সিদ্ধান্ত আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংয়োগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ছুটির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ২৫ আগস্টের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তখন তা সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে উদ্ভুত পরিবেশ অনুকূলে এলেই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা চিন্তা করবে। পরীক্ষা নেয়ার মত অনুকুল পরিবেশ তৈরি হলে ১৫ দিন সময় দিয়ে স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে তার ১৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হবে, যাতে পরীক্ষার্থীরাও জেনে প্রস্তুতি নিতে পারে। অনুকূল পরিবেশ হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা চিন্তা করবে সরকার জানান শিক্ষামন্ত্রী।

গত এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত থাকলেও করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে দেশের সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে এবং পরীক্ষাগুলোর কী হবে, তা জানার প্রবল আগ্রহ রয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

করোনার কারণে পাঁচ মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবশ্য কিছু প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ও সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পরিস্থিতির কারণে সবাইকে মানিয়ে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা।

সরকারের শীর্ষমহল থেকে ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়ে রাখা হয়েছে, করোনার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা শুরু হলে সবার আগে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও খোলার পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মনে করছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ছাড়া খোলা সম্ভব হবে না বলে ইউজিসি সূত্র জানিয়েছে।

গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাসরুমে হয়তো সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু আবাসিক হলে তা সম্ভব নয়। সেখানে একজনের করোনা হলে আরও দশজন আক্রান্ত হতে পারে। এ জন্য পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষণ করতে চান বলে জানান তিনি।

করোনার কারণে পাঁচ মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবশ্য কিছু প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ও সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পরিস্থিতির কারণে সবাইকে এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence