ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৫১তম সমাবর্তন

উচ্ছ্বাস আর স্বপ্নে মাতোয়ারা একটি দিন

উচ্ছ্বাসরত শিক্ষার্থীরা।
উচ্ছ্বাসরত শিক্ষার্থীরা।  © টিডিসি ফটো

একজন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভূক্ত কলেজের ২১ হাজার শিক্ষার্থী এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছেন। শনিবার সকাল ১১টা থেকে সমাবর্তনের মূল আয়োজন শুরু হলেও ভোর থেকেই ছিলো ক্যম্পাসে সদ্য পাশ করা গ্র্যাজুয়েটদের উচ্ছ্বাস আর আনন্দ হিল্লোল। 

শনিবার সকাল থেকে নয়, মূলত এ উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে ৩ অক্টোবর, হাতে গাউন পাওয়ার পর থেকে। ক্যাম্পাস, হল, এ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেন বইছে প্রাণের স্পন্দন। বন্ধু ও প্রিয় মানুষদের সাথে আনন্দ উদযাপন আর চলছে শেষ মুহূর্তের স্মৃতিকে ধরে রাখার প্রয়াস। ক্যামেরার ফ্রেমে প্রতিটি মুহূর্তকে বেঁধে রাখতে চলছে নানা আয়োজন। 

অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু করে টিএসসি, কার্জন হল, মল চত্বর, সিনেট, লাইব্রেরি, মধুর ক্যান্টিন, শহীদ মিনার থেকে ভিসি চত্বর সব জায়গায় দল বেঁধে নিজেদের ফ্রেমবন্ধি করার চেষ্টা করছেন তারা।

সমাবর্তন হ্যাট আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে ছবি তুলছেন অনেকে, অনেকে নিয়ে এসেছেন বাবা-মাকে , ছবি তুলছেন প্রিয় শিক্ষকের সাথেও।

সমাবর্তনে উচ্ছ্বাসরত কবি জসিম উদ্দিন হলের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, পাঁচ বছর পড়ালেখা করার পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এমন একটি সমাবর্তন সত্যি আনন্দের । আজকে আমি আমার সমাবর্তন উৎসর্গ করতে চাই আমার বাবা-মাকে। তাদের কাছেই আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা বলতে গেলে এখানকার পরিবেশ, বন্ধুবান্ধবদের সাথে কাটানো স্মৃতি মনে পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসের পড়ালেখার চাইতেও তাদের কাছ থেকেই বেশি শিখেছি।

নব্য গ্র্যাজুয়েটদের সাথে সাথে এইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারায়ও ছিলো ভিন্ন সাজ। মূল অনুষ্ঠানস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ ক্যাম্পাসের সবখানে শোভা পেয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন। কার্জন হল, টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরসহ সব জায়গায় ছিলো সমাবর্তনের আমেজ।

কথা হয় অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ফাহমিদুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, সমাবর্তনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাই। দেশ সেরা বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করতে পারার আনন্দের পাশাপাশি খারাপও লাগছে। খারাপ লাগছে যখন ভাবি আর কিছুদিন পরেই প্রিয় ক্যম্পাস ও প্রিয় মানুষগুলোকে ছেড়ে চলে যেতে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী  রোকেয়া আক্তারের ভাষায়, সমাবর্তনের মাধ্যমে শুধু স্বীকৃতিই নয় এর মাধ্যমে আমাদের উপর অর্পিত হয় অনেক বড় দায়িত্ব।

এদিন সামর্থের সবটুকু দিয়ে আগামী দিনে দেশ মাতৃকার সেবায় কাজ করার প্রত্যয় ছিল গ্রাজুয়েটদের চোখে মুখে।

৫১-তম সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাধিক সংখ্যক, ২১ হাজার ১১১জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচডি এবং ২৭ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করেন। এবারের সমাবর্তন বক্তা জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অধিভুক্ত সাত কলেজের রেজিস্ট্রেশনকৃত গ্র্যাজুয়েটগণ ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে সরাসরি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। 


সর্বশেষ সংবাদ