‘বিজ্ঞান শিক্ষককে সম্মানিত করা প্রয়োজন ছিল, সেখানে বন্দী করেছে’

বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল
বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল  © ফাইল ছবি

মুন্সিগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’। বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক থেকে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে হৃদয় মণ্ডলকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং তাকে হেনস্থা করার জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। আর যারা অসহিষ্ণুতা, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তদন্তের মাধ্যমে তাদের উন্মোচন করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আলোচিত ঘটনাতে এটা এখন প্রমাণিত যে, শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বিজ্ঞানের চর্চায় নিবেদিতপ্রাণ একজন এবং তাঁর একান্ত সত্তাটি আপাদমস্তক শিক্ষকতারই সত্তা। কারণ যতটা ধৈর্য্য ধরে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের উস্কানিমূলক অযাচিত প্রশ্নের বিন্দুমাত্র বিরক্তি প্রকাশ ব্যতীত উত্তর করে গেছেন তা তাঁর বিনয় ও জ্ঞানেরই বহিঃপ্রকাশ। এমন মহান একজন শিক্ষককে যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা প্রয়োজন, সেখানে রাষ্ট্র তাঁকে কারাগারে বন্দী করেছে।’

আরও পড়ুন: বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি চায় জাসদ

বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা শ্রেণিকক্ষের ওই কথোপকথনের লিখিত রূপ পড়েছি, এবং ওই আলাপচারিতাকে স্বাভাবিক এক বিতর্ক বলেই মনে করছি। শিক্ষকের দিক থেকে ধর্মীয় অবমাননার কোনো প্রয়াস তো ছিলই না, বরং যুক্তি দিয়ে, একাডেমিক ভঙ্গিতে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর ও ব্যাখ্যা করার একটি মনোভঙ্গি এতে স্পষ্ট ছিল। যদিও শিক্ষার্থীর দিক থেকে ছুঁড়ে দেয়া প্রশ্নগুলো উদ্দেশ্যমূলক ভাবার অবকাশ রয়েছে।

এর আগে গত ০৫ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জে বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ