মা-মেয়েকে উত্ত্যক্তের জেরে মাইকিং করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষ
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪১ AM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে মাইকিং করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্যক্তের জেরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দফায় দফায় চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী থানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে দুই পক্ষের শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে অংশ নেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রমনা ইউনিয়নের সাজু ও মোতালেব নামে দুই যুবকসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চিলমারী রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মা ও মেয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যান। এ সময় গাইবান্ধার সুন্ধরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড় এলাকার তিন কিশোর গোপনে ছবি ধারণ করে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে।
মা-মেয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করার সময় কিশোররা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার কয়েকজন যুবকের চোখে পড়লে তারা প্রতিবাদ করেন। এতে দুই পক্ষের যুবকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার আলমগীর হোসেন (৩৫) তাদের ভুট্টা ক্ষেত দেখতে গেলে এক সপ্তাহ আগের ওই ঘটনার জেরে শহরের মোড় এলাকার কয়েকজন যুবক মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীরকে উদ্ধার করে।
আরো পড়ুন: রাকিবের পরিবর্তে দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন হিমেল
প্রথমে তাকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর মাইকিং করে দুই গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় গ্রামের অন্তত ৬ জন আহত হন। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। পরে সেনাবাহিনী ও দুই জেলার পুলিশ প্রশাসন উভয়পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ, প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তারা আর সংঘর্ষে জড়াবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কোনও পক্ষ থেকে লিখিত কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’