পুলিশের প্রতিবাদ লিপিতে দাবি

‘আমি হলাম যুবদলের আহ্বায়ক তুই কী জানোস, তোর চাকরি আমি খেয়ে ফেলবো’

পুুলিশ সদস্যের সঙ্গে যুবদল নেতার বাকবিতন্ডা
পুুলিশ সদস্যের সঙ্গে যুবদল নেতার বাকবিতন্ডা  © সংগৃহীত

মানিকগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশ ও জেলা যুবদল মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ লিপি দিয়েছে উভয়পক্ষ। পুলিশের প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়েছে জেলা যুবদলের এক নেতা দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘তুই আমাকে চিনিস, তুই কার রিকসা থামাইছোস। আমি হলাম মানিকগঞ্জ জেলার যুবদলের আহ্বায়ক তুই কি জানোস? তোর চাকরি আমি খেয়ে ফেলবো এই বলে কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।’

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে যুবদল দাবি করে, উল্টো পথে রিকশা নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সাবেক ফ্রান্স শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও যুবদল কর্মী ফজলুল করিম শামীমের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়। পরে তাকে আটক করে নির্যাতন চালানো হয় এবং মামলায় জড়ানো হয়।

অপরদিকে, মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় এক প্রতিবাদ লিপিতে জানায়, ‘মানিকগঞ্জ জেলার যুবদলের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তাহা সম্পন্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। বাংলাদেশ পুলিশ উক্ত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন ও বাহিনীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য উক্ত সংবাদ সম্মেলন করেন।’ 

প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে সত্য ঘটনা হলো গত ১৬ মার্চ  বিকাল ৫টার সময় ফজলুল করিম শামীম মানিকগঞ্জ থানাধীন পৌরসভাস্থ স্বর্নকারপট্টি দিক হতে রিকশাযোগে পশ্চিম দাশড়া সাকিনস্থ অগ্রণী ব্যাংক মোড়ে আসলে উক্ত স্থানে কর্মরত ট্রাফিক কনস্টেবল শাহিন আলম ফজলুল করিম শামীমকে রিকশা থামানোর জন্য সংকেত দিলে সে রিকশা না থাকিয়ে ওয়ানওয়ে রোডে উল্টো পথে কালিবাড়ীর দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে ট্রাফিক কনস্টেবল শাহিন রিকসাটিকে অগ্রণী ব্যাংক মোড়ে থামায়। রিকসার যাত্রী ফজলুল করিম শামীমকে বলা হয় এটি একটি ওয়ানওয়ে রোড উল্টো পথে যাওয়া যাবে না। উল্টো পথে রিকসা না যাওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করলে সে ট্রাফিক কনস্টেবলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বলে যে তুই আমাকে চিনিস, তুই কার রিকসা থামাইছোস। আমি হলাম মানিকগঞ্জ জেলার যুবদলের আহবায়ক তুই কি জানোস ? তোর চাকরি আমি খেয়ে ফেলবো এই বলে  কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন কনস্টেবল তাকে গালিগালাজ না করার জন্য নিষেধ করিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রিকশা থেকে নেমে উক্ত কনস্টেবলকে সরকারি কাজে বাধা দেন।

পুলিশের প্রতিবাদে আরও বলা হয়েছে, পুলিশের ইউনিফর্মের কলার ধরে আক্রমণ করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুষি মেরে সাধারণ জখম করে। তখন পার্শ্ববর্তী দোকানদারসহ সেখানে উপস্থিত অনেক পথচারী ঘটনার বিষয়টি দেখে উক্ত ব্যাক্তিকে নিবৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং তাদেরকেও শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করে, বিধায় জনগণ ফজলুল করিম শামীমকে আটক করে রাখেন। বিষয়টি কনস্টেবল তাৎক্ষনিক মানিকগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সার্জেট আলী আকবরকে জানালে তিনি দ্রুত সার্জেন্ট কে এম রফিকুল ইসলাম ও অন্যান্য ফোর্সদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। 

পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি তখন  সার্জেন্ট আলী আকবর ও সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামের তর্কে লিপ্ত হয় এবং তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামকে পার্শ্ববর্তী দোকানে সার্টারের ভিতরে নিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ঘটনার সংবাদ বেতার বার্তায় শুনে ট্রাফিক বিভাগের টিআই প্রশাসন মো. আঃ হামিদ খান ঘটনাস্থলে পৌছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেন এবং ওই ব্যাক্তিকে থানার মোবাইল পার্টিকে ডেকে তাদের নিকট হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় আইন ভঙ্গ করা এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদানের কারণে ওই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। 


সর্বশেষ সংবাদ