ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ, মালপত্র ফেরত দিতে টালবাহানা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৫ PM , আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৬ PM
বরিশালের গৌরনদীতে তারেক আহসান প্যাদা নামে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর অর্থ ও মালপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরে এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সালিশ হয় এবং মালামাল ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও ওই ছাত্রদল নেতা তা ফেরত দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী আব্বাস সিকদার (৪৫) মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের জজিরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ওমানপ্রবাসী।
স্থানীয় সূত্রে সূত্রে জানা গেছে, আব্বাস সিকদার গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে মামা বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে তিনি মামা বাড়ির পাশের কুতুবপুর বাজারে গিয়ে একটি চায়ের দোকানের কোণে বসে ওমান থেকে আনা নেশা জাতীয় দ্রব্য সিসা গ্রহণ করেন। এ দৃশ্য দেখে ফেলে এলাকার কয়েক যুবক।
তারা জানান, এর পর আব্বাস মোটরসাইকেলে মামা বাড়ির দিকে ফেরার সময় গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক আহসান (তারেক প্যাদা) ও তার সহযোগী ইব্রাহীম খান, জুয়েল খলিফা, সুমন খান মিলে আব্বাসের পথরোধ করে। একপর্যায়ে তারা আব্বাস সিকদারকে মারধর করে তার মানিব্যাগ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণের চেইন ও আংটি, বিদেশি হাতঘড়ি, মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেন। এ ছাড়া তারা আব্বাসের মোবাইল ফোনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ২৯ হাজার টাকা সরিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে তারা ওই প্রবাসীর মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলটি ফেরত দিয়ে তাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনার পরদিন এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তার মালপত্র উদ্ধারে নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জামাল ফকিরসহ স্থানীয় নেতাদের সালিশ হয়। সেখানে প্রবাসীর মালপত্র, অর্থ, স্বর্ণালংকার ও হাতঘড়ি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় তারেক প্যাদাকে। কিন্তু এ ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও তারেক প্যাদা ও তার সহযোগীরা প্রবাসীর অর্থ ও মালপত্র ফেরত দেননি।
পরে ওই প্রবাসী ও তার স্বজনরা আবারও বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করলে তারা জানান, তারেক প্যাদা তাদের নির্দেশ মানছে না। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগের পরামর্শ দেন তারা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রবাসী আব্বাস সিকদার বলেন, তিনি ১৪ বছর ধরে ওমানে আছেন। এবার ৯ বছরের বেশি সময় পর তিনি ছুটিতে দেশে এসেছেন। ১৫ মার্চের আগেই আবার তিনি ওমানে ফিরে যাবেন। এখন পুলিশের কাছে অভিযোগ বা মামলা দিলে প্রবাসে বসে তিনি কীভাবে মামলার কার্যক্রম চালাবেন– এটা ভেবে পুলিশে অভিযোগ দেননি। তার এ অপারগতার সুযোগ নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা।
এ ব্যাপারে ছাত্রদল নেতা তারেক আহসানকে (তারেক প্যাদা) জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিপক্ষ তার নামে মিথ্যা রটাচ্ছে।
নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জামাল ফকির বলেন, তিনি ঘটনা জানার পর তারেক প্যাদা ও তার বাবা আতাহার প্যাদাকে ডেকে ছিনিয়ে নেওয়া মালপত্র ফেরত দিতে বলেন। তারা ফেরত দেওয়ার ওয়াদা করে গেলেও ফেরত দেননি। ফলে তিনি ভুক্তভোগী ও তার স্বজনদের পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।