সমন্বয়হীনতা, তারিখ ও কেন্দ্র জটিলতায় আটকে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষা

নানা জটিলতায় আটকে আছে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা
নানা জটিলতায় আটকে আছে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা  © ফাইল ফটো

দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী নিয়োগ পরীক্ষা এপ্রিলে হতে পারে বলে সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। দুই দফায় তারিখ নির্ধারণ করে কেন্দ্র বাছাইয়ের চিঠি সামনে আসলেও এখন তার কোনোটিতেই পরীক্ষা হবে না বলে অনেকটাই নিশ্চিত। সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের।

এরমধ্যেই জেলায় পরীক্ষা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। শুরুতে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হলেও এখন জেলায় জেলায় পরীক্ষা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কর্মকর্তারা। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের বড় একটি অংশ। তারা বলছেন, ঢাকার বাইরে পরীক্ষা হলে বড় ধরনের দুর্নীতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কোটা বাতিলের দাবিতেও সরব রয়েছেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন ১৩ লাখের বেশি প্রার্থীরা। শুরুতে ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের কথা জানিয়ে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরে চলতি মাসে তা ৪৫ হাজার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নিয়োগ পরীক্ষা হবে এটি।

চাকরিপ্রার্থী তানজির ইসলাম বলেন, ‘শুরুতে জানানো হলো ১ এপ্রিল পরীক্ষা। সেভাবেই প্রস্তুতি নিলাম। এখন দেখছি ওই তারিখে পরীক্ষা হবে না। কবে শুরু হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা।’

জানা গেছে, দুই দফায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ও কেন্দ্র নিয়ে চিঠি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। প্রথমটিতে বলা হয়, আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজধানী ঢাকায় পাঁচ ধাপে পরীক্ষা হবে। পরে আরেক চিঠিতে বলা হয়, ৮ এপ্রিল থেকে চার ধাপে পরীক্ষা হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সভা হবে। মন্ত্রণালয়ের সেই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’ তবে সভার তারিখ জানাতে পারেননি তিনি। যদিও এর আগে চলতি সপ্তাহেই সভাটি হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল।

মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না থাকায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও পরীক্ষা হচ্ছে না। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতায় বিষটি জটিল হচ্ছে বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের।

আরো পড়ুন: পেছাতে পারে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা, সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহে

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘মন্ত্রণালয় আর অধিদপ্তরের কাজে কোনো সমন্বয় নেই। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারছে না অধিদপ্তর। প্রস্তুতি না জেনেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়। পরে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে তালগোল পাকায়।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সভা করে জটিলতা সমাধানের উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের সাথে কয়েক দফায় সভা হয়েছে। কমিটির মতামতের আলো দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রণালয়।

এদিকে জেলায় নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার বিরোধীতা করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের বড় অংশ। তারা সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। এ ছাড়া চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয়কে ঢাকায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ‍জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রয়োজনে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার কথাও জানিয়েছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ