জেলায় জেলায় প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা, দুর্নীতির শঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের
- এম টি রহমান
- প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২২, ১১:৪৮ AM , আপডেট: ২১ মার্চ ২০২২, ১২:০২ PM
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিনেও নেওয়া হয়নি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। তবে করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় আগামী মাসে এ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে বলে আলোচনা শুরু হয়েছে। শুরুতে এ পরীক্ষা শুধু ঢাকায় নেওয়ার কথা বলা হলেও এখন জেলায় জেলায় নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানাচ্ছে।
এ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। ঢাকার বাইরে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হলে দুর্নীতি হতে পারে বলে চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে মনে করছেন। তারা বলছেন, জেলায় পরীক্ষা হলে স্থানীয় অনেক নেতা এতে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। ফলে পরীক্ষা নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।
অতীতে জেলায় প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার সময় হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে বলে চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন। যদিও চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ জেলায় পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। এতে তারা যাতায়াতের ভোগান্তি থেকে মুক্তি ও অর্থ সাশ্রয়ের কথা বলছেন।
আরও পড়ুন- প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় না জেলায়, সিদ্ধান্ত হতে পারে আজ
মনির উদ্দিন নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘ঢাকার বাইরে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হলে তাতে অনেক নেতা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে পারেন। এতে পরীক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ জন্য ঢাকায়ই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ।’
এদিকে রোববার বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, ঢাকায় নয় জেলায় পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পক্ষে-বিপক্ষে ফেসবুককেন্দ্রীক বিভিন্ন চাকরির গ্রুপে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যদিও এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি মন্ত্রণালয়।
রোববার রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুব তুহিদ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা জেলা পর্যায়ে নেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সোমবার (২১ মার্চ) মিটিং হওয়ার কথা আছে। সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা জেলা পর্যায়ে হতে পারে। এ বিষয়ে মিটিংয়ে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন- মারা গেলেন সেই ফাহমিদা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘ঢাকায় পরীক্ষা হলে নানাভাবে তদারকির সুযোগ থাকে। ফলে অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ জন্য ঢাকায় পরীক্ষা হওয়া উচিৎ।’
আবার কেউ কেউ জেলায় পরীক্ষার কেন্দ্র করার পক্ষে মত দিচ্ছেন। চাকরিপ্রার্থী আরাফাতুল মামুর বলেন, ঢাকায় পরীক্ষা হলে ভোগান্তি বাড়বে। এছাড়া পরীক্ষার কমপক্ষে একদিন আগে ঢাকায় চলে যেতে হবে। ফলে থাকা-খাওয়ার জন্য আলাদা অর্থ খরচ করতে হবে। সেই সঙ্গে যাতায়াত বাড়াতো আছেই। আর জেলায় পরীক্ষার কেন্দ্র হলে এসব খরচ অনেক কমে যাবে।
এর আগে অধিদপ্তরের কেন্দ্র বাছাই সংক্রান্ত দুটি চিঠিতে এপ্রিল মাসে পরীক্ষা শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয়। যদিও ওই তারিখ চূড়ান্ত নয় বলে পরে জানানো হয়। জুলাইয়ের মধ্যে এই নিয়োগ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।