চাকরির সার্কুলার কমল ৮৭ শতাংশ, বাড়ল বেকারদের হতাশা
- শিউলী রহমান
- প্রকাশ: ৩০ মে ২০২০, ০৫:২২ AM , আপডেট: ৩০ মে ২০২০, ১১:০৫ AM
কর্মহীন হয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বের অগণিত মানুষ। যার ঢেউ বাংলাদেশেও লেগেছে। একদিনে মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন, তেমনি শঙ্কায় ভুগছেন নতুন চাকরি প্রাপ্তি নিয়ে। চাকরি হারানো-চাকরি পাওয়ার এমন ডামাডোলের মধ্যেই শুক্রবার এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই চাকরির সার্কুলারের হার ৮৭ শতাংশ কমেছে; গত বছরের এপ্রিলের সঙ্গে তুলনা করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বেগবান করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটি।
এডিবি বলছে, চাকরির সার্কুলার সবচেয়ে বেশি কমেছে পোশাক ও শিক্ষাখাতে। তবে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে এনজিও খাত। বিডিজবস ডটকমের তথ্য বিশ্লেষণ করে এডিবি’র প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই চাকরির সার্কুলারের হারে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত যেখানে ১০-১৭ শতাংশ সার্কুলার কমেছিল; সেখানে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এসে ৫৯ শতাংশ (ডিসেম্বরের তুলনায়) কমে যায়। অথচ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, চলতি ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ১ শতাংশ চাকরির হার কমেছিল।
প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, সবচেয়ে বেশি সার্কুলার কমেছে তৈরি পোশাক ও শিক্ষা খাতে; শতাংশে যা ৯৫ ভাগ। এছাড়াও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৯২ শতাংশ, স্বাস্থ্য খাতে ৮২ শতাংশ, আইসিটি খাতে ৮১ শতাংশ এবং এনজিও খাতে ৬৪ শতাংশ সার্কুলার কমেছে। প্রতিবেদনে আশঙ্কাজনকভাবে চাকরির আবেদন কমার কারণ হিসেবে করোনার প্রদুর্ভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছে। ইতোমধ্যে ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি; বন্ধ রয়েছে ৩৮তম বিসিএসসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশও। ঠিক একইভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে বেশ কিছু নিয়োগ পরীক্ষার প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও মৌখিক পরীক্ষা হয়নি। আবার কোনো নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও প্রকাশিত হচ্ছে না চূড়ান্ত ফল। সবকিছুর জন্যই করোনার প্রাদুর্ভাবকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারি কর্ম কমিশন সূত্র জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে চাকরির সার্কুলার আশঙ্কাজনভাবে কমে যাওয়ায় দিন দিন আরো হতাশ হয়ে পড়ছেন বেকাররা। তারা বলছেন, ‘একদিকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নেই, অন্যদিকে যেসব বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোও থমকে গেছে। এমন অবস্থায় কী করা যায়— আমরা দিশা পাচ্ছি না।’ বেকররা তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য সরকারের বিশেষ সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।