১৩ দফার স্মারকলিপিতে শেকৃবি অধ্যাপকের পদত্যাগ চায় ছাত্রদল, দাবিটি ‘মিসটেক’ বললেন সভাপতি

অধ্যাপক নুরুদ্দীন মিয়া
অধ্যাপক নুরুদ্দীন মিয়া  © টিডিসি ফটো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং স্বৈরাচার সরকারের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থানকারী শিক্ষক অধ্যাপক মো. নুরুদ্দীন মিয়াকে পদত্যাগ করার দাবি তুলেছে শেকৃবি ছাত্রদল। তাদের ১৩ দফার স্মারকলিপিতে এ দাবি জানান তারা। কিন্তু কেন এ দাবি তোলা হয়েছে তা জানেন না অধ্যাপক নুরুদ্দীন মিয়া এবং ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

সম্প্রতি শেকৃবি থেকে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণকারী শিক্ষা ক্যাডারের মুকিবকে আটক করায় শেকৃবি প্রশাসনের নিকট ১৩ দফা দাবি পেশ করেন শেকৃবি শাখা ছাত্রদল। উক্ত দাবির ১১ নং দাবিতে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক মো. নুরুদ্দীন মিয়াকে দ্রুত অপসারণ দাবি জানায় তারা। 

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তোলপাড়। এই অধ্যাপক হতাশ হয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শেকৃবির ছাত্রদল পরিচালক শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অপসারণ চায়। শেকৃবির আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের মতামত কি?’ 

শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ লিখছেন, ‘১১ নং পয়েন্ট টা যদি আমার সভাপতি, সেক্রেটারি বুঝায় দিতেন তাহলে ভালো হইত। আর ছাত্রদলের কারা কারা জড়িত ছিল এটা তৈরিতে?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নুরুদ্দীন মিয়া বলেন, ‘এটা আমার প্রেস্টিজ ইস্যু, আমার আত্মসম্মানবোধের ইস্যু। উপাচার্য বললে আমি পদত্যাগ করে ফেলতাম। কিন্তু যেহেতু তিনি বলেন নি, এজন্য আমি পদত্যাগ করছি না।’

শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘এখানে যে ১৩ দফা দাবি দিয়েছে সেটা কে, কীভাবে তৈরি করেছে তা আমি এবং সহ-সভাপতি কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে জানতে আমি সাধারণ সম্পাদককে ফোন দিয়েছিলাম, কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি। এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর আগে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর যে দাবি-দাওয়া দেয়া হয়েছিল সে সম্পর্কেও আমি অবগত ছিলাম না। এবার তারা যে স্যারের দায়িত্ব থেকে অপসারণ চেয়েছে সেই নুরুদ্দীন স্যার ক্যাম্পাসের একমাত্র শিক্ষক যে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রদের পক্ষে মিছিল করেছিল। এমন একজন শিক্ষককে তারা কেন অপসারণ চাইলো তা আমি জানি না। এখানে সভাপতি-সেক্রেটারির ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকতে পারে। কারো ব্যক্তিগত আক্রোশের দায়ভার ছাত্রদল নিবে না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেকৃবি ছাত্রদল সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস বলেন, ‘নুরুদ্দীন স্যার জুলাই আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমান প্রশাসন তাকে যে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন তার থেকেও ভালো দায়িত্বের দাবিদার তিনি। আমাদের দাবি ছিল স্যারকে এই পোস্ট থেকে সরিয়ে অন্য ভালো পোস্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু জুনিয়ররা লেখার সময় ভুল করে এটা লিখে ফেলেছে এবং গতকাল আমরা ছাত্রলীগের লিফলেট বিতরণকারী মুকিবের ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমরা না পড়ে স‌ই করে ফেলেছি।’

জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই মো. নুরুদ্দীন মিয়া ছাত্রসমাজের পক্ষে ছিলেন। এমনকি শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শিক্ষক সমাজের মিছিলে প্রথম সারিতে অবস্থান করেছিলেন তিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ