‘আয়োজন করে’ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের সংঘর্ষ
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৩, ০৫:৫৪ PM , আপডেট: ০২ জুন ২০২৩, ০৫:৫৪ PM
কথা ছিলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে দেখা হবে দুই বহিরাগত প্রেমিক-প্রেমিকার। তাদের দুজনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু কোনো কারণে প্রেমিকার সঙ্গে প্রেমিকের দেখা হয়নি। তবে যা হয়েছে সেটা মারামারি। প্রেমিকা নিজে না আসলেও অপর প্রেমিককে ক্যাম্পাসে তার কাছে পাঠিয়েছেন। পরে প্রেমের বদলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আয়োজন করে এ মারামারি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থীসহ মোট তিনজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (০২ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় রেলক্রসিং সংলগ্ন তৃপ্তি হোটেলের পার্শ্বে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো শফিকুল ইসলাম।
জানা যায়, আহত তিন জনের মধ্য দুইজন বাকৃবির পশুপালন আনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আহত আরেকজন হলেন ত্রিশালের বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন প্রিন্স। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে, বাকিরা পালিয়ে গেছেন।
আটককৃত দুজন হলেন- ময়মনসিংহ বড় বাজারের মো. তাহমিদ আনন ও মাহমুদুল হাসান নিঝুম। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে তাদের মারধর শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
মাহমুদ হোসেন প্রিন্স বলেন, ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের মাহমুদার সাথে আমার অনেকদিনের প্রেমের সম্পর্ক। আজকে আমার সাথে দেখা করতে বাকৃবিতে আসতে বললে আমি ত্রিশাল থেকে এখানে আসি। কিন্তু বাকৃবি ক্যাম্পাসে তখন মাহমুদা উপস্থিত ছিল না।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বাকৃবির নাম 'ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়'
অভিযোগ করে মাহমুদ বলেন, এ সময় মাহমুদার অপর প্রেমিক ও তার বন্ধুরা আমার সাথে বাজে ব্যবহার করে ও আমাকে হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তারা আমাকে মারধর শুরু করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার বন্ধুরা উদ্ধার করতে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ মেডিক্যাল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. সাঈদুর রহমান বলেন, তিনজনকে আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন হাতে ও অন্যজন পায়ে আঘাত পেয়েছেন। তাদেরকে ব্যান্ডেজ দেওয়া হয়েছে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা ঘটনায় জড়িতদের একটি কক্ষে আবদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে কোতোয়ালী থানার মোবাইল টিম জড়িতদের উদ্ধার করে নিয়ে যান। তাদেরকে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় উদ্ধারের পরবর্তীতে ঘটনা জানার জন্য মুঠোফোনে থানায় একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কীভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাস্পাসে বহিরাগতরা এসে এভাবে অতর্কিত হামলা চালাতে পারে, এ প্রশ্ন সবার মনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আজকে দুপুরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। জড়িত দুইজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কোতোয়ালী থানায় সৌপর্দ করা হয়েছে। এসময় শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।