বাবার লাশ মর্গে রেখে পরীক্ষা দিলেন সানজিদা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ০৪:৪৪ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২৩, ০৫:০৯ PM
রাতে চোখের সামনে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। সেই শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা। এমন পরিস্থিতিতেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন সানজিদা ইসলাম রিয়া নামের এক শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নে। সানজিদা ইসলাম রিয়া পাকুরগাছিয়া এলাকার নিহত শফিকুল ইসলাম পনুর মেয়ে। তিনি জর্জিয়া কিন্ডারগার্টেন থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের পাকুরগাছিয়া এলাকায় নির্বাচনী প্রতিহিংসার জেরে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম পনুকে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের প্রায় ৯ জন গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরো পড়ুন: ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ১৮১৮১ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৬১
নিহত সাবেক ইউপি সদস্য পনু মিয়ার স্ত্রী ও পরীক্ষার্থী সানজিদার মা ছবি আক্তার বলেন, গতকাল রাতে ঠান্ডা বাহিনীর ২০ থেকে ২৫ জন লোক রামদা, টেঁটা দিয়ে আমাদের সামনেই আমার স্বামীকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও ওরা মারধর করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে, পনুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। সকালে নিহত পনুর মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী সানজিদা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে বাবাকে শেষ দেখা দেখে আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব ধীমান চন্দ্র রায় বলেন, জর্জিয়া কিন্ডারগার্টেনের পরীক্ষার্থী সানজিদা আমাদের এখানে পরীক্ষা দিচ্ছে। আমরা তাকে যথেষ্ট মানসিক সাপোর্ট দিয়েছি। ভালোভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে সে।
আরো পড়ুন: একক ভর্তি পদ্ধতি নিয়ে উপাচার্যদের মতামত চেয়েছে ইউজিসি
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের ৭-৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী কোনো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে এমন অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঠান্ডা গ্রুপ ও পনু গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরেই নির্বাচনের দেড় বছর পর গতকাল রাতে সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম পনুকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা।