চবি ভিসিকে নিয়ে মিম, পেজের এডমিনদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে প্রশাসন
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২২, ০৮:২১ PM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২২, ০৮:২১ PM
ফেসবুকের একটি পেজ থেকে (CU Dark Memes নামে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে নিয়ে মিম (ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও) বানানোর অভিযোগ উঠেছে। পরে বিষয়টি চবি প্রশাসনের নজরে আসলে ওই পেজের এডমিনদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ভিসিকে নিয়ে এ ধরণের আপত্তিকর পোস্টের নিন্দাও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, সম্প্রতি চবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অডিটোরিয়ামে কর্মচারীর বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হওয়ার জেরে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে ভিসি অধ্যাপক শিরীন আখতারের ছবি ব্যবহার করা হয়। যদিও ভিসি এসময় দেশের বাহিরে অবস্থান করছিলেন বলে জানায় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: চবির অডিটরিয়ামের বিয়ের আয়োজন কেন, কারণ জানালো কর্তৃপক্ষ
আজ রবিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) দিবাকর বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়। এদিকে, CU Dark Memes নামক ওই ফেসবুকে পেজের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণার পরপরই সেটি ফেসবুকে আর খোঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান বাইরে কোনো কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে অপারগতা প্রকাশ করায় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে অডিটোরিয়াম ব্যবহারের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হলে চবি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছে। তাছাড়া এ ঘটনায় ভিসিকে নিয়ে মিমও বানানোয় তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গতকাল শনিবার (১৯ মার্চ) ‘CU Dark Memes’ নামে একটি ফেসবুক পেজে চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ শিক্ষক লাউঞ্জের টেবিল বয় মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে নিয়ে কে বা কারা একটি কাণ্ডজ্ঞানহীন পোস্ট আপলোড করেছে। এ বিষয়টি চবি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত আপত্তিকর, অসম্মানজনক, নীতি-আদর্শ বহির্ভূত এবং অবিবেচনা প্রসূত। আপত্তিকর পোস্টের বিষয়ে চবি কর্তৃপক্ষ তীব্র নিন্দা জানায়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকৃত বিষয়টি হচ্ছে, ওই কর্মচারী দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক লাউঞ্জে টেবিল বয় হিসেবে শিক্ষকদের সেবা দিয়ে আসছে এবং তার চাকুরিও বর্তমানে শেষ পর্যায়ে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তার মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান বাইরে কোনো কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে অপারগতা প্রকাশ করে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবরে লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করেন। ডিন মানবিক কারণ বিবেচনা করে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দকে আপ্যায়নের জন্য শুধুমাত্র লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু অডিটরিয়াম ব্যবহারের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হবার পর ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওই অনুষ্ঠানের সময় ভিসি চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নির্বাহীর ব্যাপারে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত পোস্টটির আপলোডকারীকে খুঁজে বের করে দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিয়ে নিয়ে আপত্তিকর ভিডিও বানানো হয়েছে। সেখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে ভিসি ম্যামের ছবি। অথচ ম্যাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল না। কিছু না জেনে-বুঝে ‘অসম্মানজনক’ ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
প্রক্টর আরও বলেন, ফেসবুকে ব্যবহারের ভালো মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। এটা মূলত: নির্ভর করে কে কোন উদ্দেশ্যে এটাকে ব্যবহার করছে। ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট কিংবা কাউকে হেয় করাটা আইনত অপরাধ। সমালোচনা ভালো, তবে সেটা গঠনমূলক হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা থাকবে যেকোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রুল রেগুলেশন জেনে সমালোচনা করা।