চবির অডিটরিয়ামের বিয়ের আয়োজন কেন, কারণ জানালো কর্তৃপক্ষ

  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের অডিটরিয়ামে একটি বিয়ের আয়োজনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এমনকি এ ঘটনায় ফেসবুকের একটি পেজ থেকে চবি ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে নিয়ে মিমও (ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও) বানানো হয়েছে।

চবি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের উন্নয়নের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এজন্য কেউ টাকার জন্য গাছ কাটে, আবার কেউ চাকসু থেকে শুরু করে অডিটোরিয়াম পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে দিচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রোগ্রামের জন্য অডিটোরিয়ামের অনুমতি নিতে পড়তে হয় পদে পদে হয়রানি। এখন এরকম বেশি কিছু লাগবেনা, শুধুু টাকা দিলেই হবে। বিয়ের মতো আরো আয়োজন ক্যাম্পাসে করা যাবে।

শিক্ষার্থীদের এরকম আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে চবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান বাইরে কোনো কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে অপারগতা প্রকাশ করায় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে অডিটোরিয়াম ব্যবহারের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হলে চবি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছে। তাছাড়া এ ঘটনায় ভিসিকে নিয়ে মিমও বানানোয় তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ রবিবার (২০ মার্চ) চবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) দিবাকর বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার (১৯ মার্চ) ‘CU Dark Memes’ নামে একটি ফেসবুক পেজে চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ শিক্ষক লাউঞ্জের টেবিল বয় মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে নিয়ে কে বা কারা একটি কাণ্ডজ্ঞানহীন পোস্ট আপলোড করেছে। এ বিষয়টি চবি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত আপত্তিকর, অসম্মানজনক, নীতি-আদর্শ বহির্ভূত এবং অবিবেচনা প্রসূত।  আপত্তিকর পোস্টের বিষয়ে চবি কর্তৃপক্ষ তীব্র নিন্দা জানায়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,  প্রকৃত বিষয়টি হচ্ছে, ওই কর্মচারী দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক লাউঞ্জে টেবিল বয় হিসেবে শিক্ষকদের সেবা দিয়ে আসছে এবং তার চাকুরিও বর্তমানে শেষ পর্যায়ে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তার মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান বাইরে কোনো কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে অপারগতা প্রকাশ করে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবরে লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করেন। ডিন মানবিক কারণ বিবেচনা করে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দকে আপ্যায়নের জন্য শুধুমাত্র লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু অডিটরিয়াম ব্যবহারের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হবার পর ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওই অনুষ্ঠানের সময় ভিসি চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নির্বাহীর ব্যাপারে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত পোস্টটির আপলোডকারীকে খুঁজে বের করে দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ