ঢাবির কলা ভবন

শৌচাগার সংকট, কম পানি খেয়ে ক্লাসে আসেন অনেক ছাত্রী

ঢাবির কলা ভবন
ঢাবির কলা ভবন  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনটি পাঁচতলা বিশিষ্ট। ১৭টি বিভাগের ৪ থেকে ৫ হাজার ছাত্রী এই ভবনে প্রতিদিন ক্লাস করছেন। এসব ছাত্রীদের জন্য ভবনের নিচতলা ও চতুর্থ তলার দুটি কমনরুমে মাত্র ৬টি শৌচাগার রয়েছে। তাই ছাত্রীরা যে তলায়ই ক্লাস করুন না কেন, শৌচাগারে যাওয়ার জন্য তাদের এ দুই কমনরুমেই দৌড়াতে হয়। শুধু দৌড়াতেই হয় না, দুটি কমনরুমে গিয়ে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক সময় শৌচাগার যেতে হয় তাদের।

জানা যায়, এক সময় এই ভবনে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সব ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাস করতেন। তবে কয়েক বছর ধরে এই ভবন থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নতুন ভবনে একাধিক বিভাগ স্থানান্তর করা হয়। তবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কয়েকটি বিভাগে এখনও ক্লাস হয় কলা ভবনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, কলা অনুষদের ১৭টি বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য মোট আসন সংখ্যা ২ হাজার ৩৭৮ জন। ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ৫টি বর্ষের ৪-৫ হাজার ছাত্রী কলা ভবনে নিয়মিত ক্লাস করেন। তারা বলছেন, অপর্যাপ্ত শৌচাগারের কারণে ক্লাস করতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েন তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি কম খাচ্ছেন বলে জানালেন অনেক ছাত্রী।

আরও পড়ুন-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: ঢাবির ‘খ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের জনপ্রিয় বিভাগগুলো

কলা ভবনে ক্লাস করতে আসা দর্শন বিভাগের ছাত্রী কণিকা রাণী রায় বলেন, শৌচাগারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেক সময় দেখা যায় ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আবার দেরি করে ক্লাসে ঢুকতে গেলে অনেক সময় শিক্ষকরা অনুমতি দেয় না। তখন খুবই খারাপ লাগে। আর পরীক্ষার হলে দেরিতে ঢুকলে তো সব শেষ আর বলার কিছু থাকে না।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, সকাল ৮টায় ক্যাম্পাসে এসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস করি। কলা ভবনে পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকায় প্রতিনিয়তই খুব সমস্যায় পড়তে হয়।

আরও পড়ুন-ঢাকার বাইরে হবে না প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা 

তিনি বলেন, অনেক সময় শৌচাগারে যেতে পারি না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রয়োজন। অনেকক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার কারণে পেটে ব্যথা অনুভব করি। এমনকি এভাবে প্রস্রাব চেপে রাখতে রাখতে কিডনি সমস্যায়ও ভুগতে পারি। পানির পিপাসা পেলেও পানি খেতে আতংকে থাকি আবার কখন শৌচাগারে যেতে হয়। প্রশাসনের কাছে ছাত্রীদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে কলা ভবনে পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী মোছা. হুমায়রা খানম জূই বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যে শৌচাগারে যাওয়া খুব দরকার হয়। বিশেষ করে পিরিয়ডের সময়। কিন্তু পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকায় খুবই বিপাকে পড়তে হয়। কমনরুমে কম শৌচাগার থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তা ব্যবহার করা যায় না। কারণ মাত্র ২টি কমনরুম আর ছাত্রীর সংখ্যা অনেক। আর এতে আমাদের হয়রানিতে পড়তে হয়। কলা ভবনে হয় মেয়েদের জন্য শৌচাগার বানানো হোক না হয় কমনরুম বৃদ্ধি করা হোক।

শুধু কলা ভবন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে ছাত্রীদের শৌচাগার সংকট সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও দাবি তুলছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এটা নিয়ে লেখালেখি করছেন। আবদুল্লাহ হিল বাকি নামের এক ছাত্র লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার নেই। ক্যাম্পাসে বের হলে জরুরি সময়েও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় মেয়েদেরকে। অনেক মেয়েই বাইরে বের হবার সময়ে কম করে পানি খায়, যাতে বাইরে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়। পুরো কলা ভবনে মেয়েদের জন্য মাত্র ২টা কমনরুম। এই বেসিক নিড নিয়ে কাউকে একটা কথা বলতে দেখি না।

আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আসার পর ডাকসু নির্বাচন থেমে গেল: সিরাজুল ইসলাম

তবে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কলা ভবনে মেয়েদের জন্য প্রতি তলায় শৌচাগাররের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা অনেকগুলো শৌচাগারকে ভাগ করে একপাশে ছেলেদের জন্য আর একপাশে মেয়েদের জন্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিষয়ে জানিয়েছি। খুব দ্রুত এর সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছেন ড. আব্দুল বাছির।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence