শাবি উপাচার্যের মন্তব্যে জাবি শিক্ষক সমিতির ক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের আপত্তিকর মন্তব্যর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন জাবি শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জাবির নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত অবমাননাকর ও অসম্মানজনক। শাবিপ্রবির উপাচার্যের আপত্তিকর উক্তির বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছি।

আরও পড়ুন: আবরার হত্যা: ৩ সাক্ষীর জবানবন্দি পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা আশাকরি, তিনি প্রকাশ্যে তার ভুল স্বীকার করে অশোভন মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেবেন।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আমরা হতভম্ব হয়েছি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য কিভাবে এমন বক্তব্য দিতে পারে। তাঁর এই বক্তব্য মানহানিকর ও বটে। যেখানে সারা পৃথিবীতে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে তাঁর এমন বক্তব্য অযৌক্তিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন দ্রুত ভুল অনুধাবন করে তাঁর অশালীন বক্তব্য অতি দ্রুত প্রত্যাহার করে নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে, শাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনে ঘি ঢেলেছে ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপ। ইতোমধ্যে তা ভাইরাল। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে।

যারা এই অডিওটি ফাঁস করেছেন তাদের দাবি, এটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের। ছাত্রীদের রাতে বাইরে থাকা নিয়ে কটাক্ষ করছেন উপাচার্য। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তারা জানিয়েছেন, অডিওটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের, তবে এটি ২০১৯ সালের।

আরও পড়ুন: সাড়ে ৪ বছরের ক্ষোভের বিস্ফোরণেই শাবিপ্রবিতে আন্দোলন-অনশন

তারা জানান, হলের গেট রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবিতে ২০১৯ সালে ছাত্রীরা আন্দোলন করেছিলেন। তখন আন্দোলনকারী ছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব মন্তব্য করেছিলেন উপাচার্য।

অডিওতে শোনা যায়, যারা এই ধরনের দাবি তুলেছে, যে বিশ্ববিদ্যালয় সারারাত খোলা রাখতে হবে, এইটা একটা জঘন্য রকম দাবি। আমরা মুখ দেখাইতে পারতাম না। এখানে আমাদের ছাত্রনেতা বলছে যে, জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েদের সহজে কেউ বউ হিসেবে চায় না। কারণ সারারাত এরা ঘোরাফেরা করে। বাট আমি চাই না যে আমাদের যারা এত ভালো ভালো স্টুডেন্ট, যারা এত সুন্দর, এত সুন্দর ডিপার্টমেন্টগুলো, বিখ্যাত সব শিক্ষক... তারা যাদের গ্র্যাজুয়েট করবে, এরকম একটা কালিমা লেপুক তাদের মধ্যে।

আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগ দাবিতে ঢাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ওই জায়গাটা কেউ চায় না, কোনো গার্ডিয়ানও চান না কিন্তু। এখন আমরা যদি কোনো মেয়েকে বলি তোমার বাবা-মা কাউকে ফোন করব... তখন তোমরাই তো এতে বাধা দিবা... না না না এইটা হবে না, দেখ হয়রানি করতেছে। কিন্তু এইটা তো প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। তোমাদেরও নৈতিক দায়িত্ব যে, এই মেয়ে কেন রাতের বেলা সোয়া দশটা পর্যন্ত স্যাররে সময় দিসে?

ওই ক্লিপে আরও শোনা যায়, আমি মাঝে মাঝে ঢাকা থেকে যখন আসি, রাতে ১২টা-১টা বেজে যায়। আমি দেখি যে আমাদের ওয়ান কিলোমিটার রাস্তা দিয়া ছেলে-মেয়ে হাত ধরাধরি করে কনসালটিং করতাছে। একটা অঘটন ঘটে গেলে দায়দায়িত্ব ভাইস চ্যান্সেলরকে নিতে হবে। যত দোষ, নন্দ ঘোষ। ভাইস চ্যান্সেলর দায়ী সে জন্য।


সর্বশেষ সংবাদ