সশরীরে পরীক্ষা নিতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া বাকি আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য তারিখ দিয়ে রাখা হয়েছে।

আজ রবিবার (১৩ জুন) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সশরীরে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে অংশ নিয়েছেন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শাহদাত বিপ্লব জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সকাল ১০টা থেকে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হয়। এদিন ৮টি বিভাগের ১১টি সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের মিডটার্ম পরীক্ষাও চলছে।

এরমধ্যে রয়েছে- লোকপ্রশাসন বিভাগের একটি সেমিস্টার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের একটি, আইন বিভাগের একটি, মার্কেটিং বিভাগের একটি, ফার্মেসি বিভাগের একটি, পরিসংখ্যান বিভাগের দুইটি, আইসিটি বিভাগের দুইটি ও অ্যাকাউন্টটিং বিভাগের দুইটি।

জাককানইবি থেকে জিহাদুজ্জামান জিসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সকাল ১০ টায় সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিনের পরীক্ষায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেন।

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান জানান, এদিন সকাল ১০টায় পরিসংখ্যান বিভাগ ও ১১টায় ডিভিএম অনুষদের ১৬ ব্যাচের পরীক্ষার মাধ্যমে সশরীরে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাস থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তারা এ দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব, শাহবাগ, নীলক্ষেত সর্বশেষ ইউজিসির কার্যালয় এলাকায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করেছেন। পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন তারা। তবে তারা পরীক্ষার মত সশরীরে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন।

দীর্ঘ সময় পর সশরীরে পরীক্ষা দিতে পারায় খুশি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা। হাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মাত্র দুটি ব্যবহারিক পরীক্ষা ও প্রজেক্টের জন্য অনার্সের সার্টিফিকেট ঝুলে আছে। যেকোনো মূল্যে পরীক্ষাগুলো দিয়ে দিতে চাই। আমার বিভাগের সম্মানিত স্যার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তারা আমাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সশরীরে পরীক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে।

এদিকে, পরীক্ষা চলাকালীন সকল শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি অনেক শিক্ষার্থী মাস্ক ছাড়া রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে যা সত্যিই দুঃখজনক। আমরা দুই-একদিনের মধ্যেই হাবিপ্রবির স্কাউট টিমের মাধ্যমে মাস্ক পড়ার ব্যাপারে সকলকে উৎসাহিত করবো। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হচ্ছে।

এর আগে, গত বুধবার (০৯ জুন) করোনায় স্থগিত হওয়া পরীক্ষাসমূহ সশরীরে নেয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির মার্কেটিং বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের অনার্স ফাইনাল সেমিস্টারের স্থগিত পরীক্ষা নেয়ার মধ্য দিয়ে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও বেশকিছু বিভাগ পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন প্রকাশ করেছে।

এছাড়া, আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ দিয়ে রেখেছে। আগামী ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১০ আগস্ট থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাবির ২০১৯ সালে স্থগিত পরীক্ষা ২০ জুন এবং ২০২০ সালের পরীক্ষা ৪ জুলাই থেকে, যবিপ্রবি এবং নোবিপ্রবি সশরীরে জুলাইয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আগামী শনিবার (১৯ জুন) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।