বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে এনে মিছিল রাবি ছাত্রদলের, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৮:৫৫ PM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৩:০০ PM

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (ভারপ্রাপ্ত) বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ, আবাসিক হলে আল-কোরআন পোড়ানো এবং অ্যাকাডেমিক ভবনে পূজার ব্যানার ছেঁড়াসহ সকল ন্যক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এতে বহিরাগত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। তবে রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর দাবি, এটা নিষিদ্ধ সংগঠন বা গুপ্ত কোনো সংগঠনের কাজ।
রবিবার (৪ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন ছাত্রদল-এর দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে তারা একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রদলের কর্মসূচিতে রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করে। তবে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে অধিকাংশই কথা বলতে রাজি হননি। তাদের একজন বলেন, স্থানীয় ছাত্রদল নেতা রাকিনের নেতৃত্বে এসেছেন। আরেকজন বলেন, বিনোদপুর থেকে বড় ভাইয়ের ডাকে মিছিলে এসেছি। এছাড়াও ঠিক কোন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তারা ছাত্রদলের এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সেটাও তারা বলতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া একজন বহিরাগত বলেন, আমি আমার এক বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে এসেছি। রাকিন ভাই আমাকে ডেকেছে, তাই তার সম্মানের খাতিরে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
আজকে ছাত্রদলের কী প্রোগ্রাম—এমন প্রশ্ন করলে আরেক বহিরাগত বলেন, আমি কিছুই জানি না। আমি আসতে চাইনি, আমাকে জোর করে ডেকে আনা হয়েছে। সামনের দিনে ডাকলে আর আসব না।
এদিকে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে সাইকেল চুরির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার তারিফ। 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ' নামে একটি গ্রুপে তিনি লিখেছেন লিখেছেন, ‘আজ সকাল থেকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এই বহিরাগত টোকাইরা ছাত্রদলের প্রোগ্রামের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল। আমার বন্ধুর সাইকেলটি শহীদুল্লাহ কলা ভবনের গ্যারেজে ছিল। ক্লাস শেষ করে ১২টার দিকে নিচে যেয়ে তার সাইকেলটি আর পায়নি। এর আগেও ছাত্রদলের প্রোগ্রামের দিন ক্যাম্পাস থেকে সাইকেল চুরি হয়েছে। বহিরাগতদের বিষয়ে প্রশাসন কবে সতর্ক হবে?’
বিক্ষোভ সমাবেশে বহিরাগতদের অংশগ্রহণ নিয়ে রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমাদের প্রোগ্রামে সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ইউনিট অংশ নেয়। আজকেও তারা ছিল। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাদের ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে তারা আমাদের দলের কেউ না। আমাদের বিতর্কিত করার জন্য সবসময় একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তারা এগুলো করছে।
কারা বিতর্ক করার জন্য এগুলো করছে বলে মনে হয়- এমন প্রশ্নের উত্তরে রাহী বলেন, এটা নিষিদ্ধ সংগঠন বা গুপ্ত কোনো সংগঠনের কাজ হতে পারে। তারা এসব বহিরাগতদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে আমাদের মিছিলে পাঠিয়ে দিচ্ছে এবং আমাদের বিতর্কিত করছে। ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য রাজনৈতিক কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে এটি সাজানো হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,‘আমি মনে করি এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তাছাড়া সবসময়ই ক্লাস চলাকালীন মিছিল সমাবেশ করতে নিষেধ করে থাকি। কিন্তু ওরা না জানিয়ে মাইক বাজিয়ে এমনটা করেছে আমরা ভাবতে পারিনি। আমাদের সতর্কবার্তা থাকলো পরবর্তীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া সাইকেল চুরির বিষয়ে প্রক্টর জানান, একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ নিয়ে এসেছিল আমার কাছে তবে সেখানকার সিসিটিভিতে সংযোগ না থাকায় একটু সমস্যা হয়েছে। আমরা সেটিকে ঠিক করে সমাধানের চেষ্টা করছি।