চাকরিতে ডিপ্লোমা কোটা বাতিলসহ ৩ দাবিতে চুয়েটে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- চুয়েট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩১ PM

চাকরিতে ডিপ্লোমা কোটা বাতিল ও বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রকৌশল নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হওয়া, কারিগরি দশম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী ব্যতীত অন্য কেউ প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করতে পারবেনা মর্মে আইন পাশ করে গেজেট প্রকাশ করার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কারণে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারীরা পদোন্নতি ও নিয়োগে ন্যায্যতা থেকে অনেকদিন ধরেই বঞ্চিত হয়ে আসছেন। দীর্ঘ ৪ বছর কঠিন পাঠ্যক্রম, ল্যাব, থিসিস ও প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে পাস করা বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা চাকরির বাজারে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সরকারি চাকরির দশম গ্রেডে একচেটিয়া শতভাগ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ এবং নবম গ্রেডে পদোন্নতিতে ৩৩.৩ শতাংশ কোটা আছে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের। অধিকন্তু নবম গ্রেডে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোটার ব্যবস্থা ৫০ শতাংশ করার অন্যায্য দাবিও জানিয়ে আসছিলো তারা।
তারা আরও বলেন, সরকারি নিয়োগে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাধান্য ও বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের উচ্চতর পদে প্রবেশে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা পেশাগত মর্যাদা ও ন্যায্যতা লঙ্ঘন করে। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল। অভ্যুত্থানের পরেও চাকরিক্ষেত্রে এরকম অন্যায্য কোটা থাকা জুলাই শহিদদের রক্তের সাথে বেইমানি। তাই অনতিবিলম্বে এ কোটা প্রথা বাতিল চান তাঁরা।
পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাফুজার রহমান মোহাব্বত বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিল সকল স্তরের বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন। বিএসসি প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে চলমান দীর্ঘদিনের বৈষম্যের অবসান আজ সময়ের দাবি। ডিপ্লোমাধারীরা অন্যায়ভাবে কোটা সুবিধা ভোগ করছে। তারা দশম গ্রেড কুক্ষিগত করে রেখেছে এবং পরবর্তীতে ৩৩ শতাংশ বা বেশি কোটা নিয়ে সরাসরি নবম গ্রেডে পদোন্নতি পাচ্ছে, যা বিএসসি সমমানের। তাই এরকম অবৈধ কোটা প্রথা বাতিল করতে হবে। দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তির যথাযথ মূল্যায়ন অত্যন্ত জরুরি। তাই আমরা যে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছি, তা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করা হোক।
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান রহমান বলেন, আজকে আমরা এখানে মেধা ও যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়নের দাবিতে একত্রিত হয়েছি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে বৈষম্য কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করছি, ডিপ্লোমা গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ১০ম গ্রেডে শতভাগ এবং নবম গ্রেডে পদোন্নতি ক্ষেত্রে ৩৩ ভাগ কোটা রয়েছে। তবে কাগজে কলমে ৩৩ ভাগ থাকলেও তা বিভিন্ন অন্যায় উপায় অবলম্বন করে ৪০-৫০ ভাগে পৌঁছায়।
তিনি আরও বলেন, ৯ম গ্রেডে কেবল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার এবং ১০ম গ্রেডে বিএসসি এবং ডিপ্লোমা উভয়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। পাশাপাশি আইন করে নিশ্চিত করতে হবে ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটরা নামের আগে প্রকৌশলী শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না। আমাদের এই তিন দফা দাবি মানা না হলে আমরা দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।