চবির পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত করে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী
- খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২২ PM , আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২২ PM

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের প্রায় দুইদিন অতিক্রম করেও উদ্ধার করা যায়নি। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন অপহৃত শিক্ষার্থীদের পরিবার। এদিকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘পাহাড়ের আঞ্চলিক একটি সংগঠন এতে জড়িত থাকতে পারে। আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, অপহরণের খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের টীম নিরলসভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য জোনও উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। চবি শিক্ষার্থীদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: জগন্নাথ-জাহাঙ্গীরনগরের পর সেরা ঢাবিতে, রাবিতেও ফার্স্ট হতে চান নুবাহ
এদিকে অপহরণের শিকার দিব্যি চাকমার মা ভারতী চাকমা বুধবার (১৬ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার মেয়ে দিব্যি চাকমা তার সহপাঠীসহ বিজুতে গেলে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরার পথে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। প্লিজ কারোর মায়ের খালি না করে, দোষ থাকলে, অন্যায় করলে উপযুক্ত শাস্তি দিন তবুও সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারোর বুকে না লাগে। আমি হাত জোড় করছি ফিরিয়ে দিন আমাদের সন্তানদের।’
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ডিপার্টমেন্টের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা,আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো, চারুকলা ডিপার্টমেন্টের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা।
পিসিপি রকেন্দ্রীয় সভাপতি নিপণ ত্রিপুরা বলেন, ‘পিসিপি চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা ও তার চার বন্ধুকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এটি একটি জঘন্য ও ঘৃণ্যতম কাজ। শিক্ষার্থীরা সেদিন গাড়ির টিকেট না পেয়ে জেলা সদরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। পরেদিন সকালে চট্টগ্রামের পথে রওনা সময় পথ আটকিয়ে গিরিফুল এলাকায় টমটম চালকসহ অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা নিশ্চিত হয়ে বলছি যে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা তাদের অতিদ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তিসহ একই সঙ্গে তাদের সুস্থ অবস্থায় মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি এবং এ ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা এ ঘটনার অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি পক্ষ ইউপিডিএফকে বিতর্কিত করার জন্য আমাদের নাম দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং নিখুঁতভাবে ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়েছেন। আমরা সংঘাতের বিপক্ষে। আমরা সবসময় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আসছি। এ অপহরণের সাথে আমাদের কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। বরং পাহাড়ের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য অন্যপক্ষকে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাদের সংগঠন কখনো এমন কাজ করে না।’