এবার উত্যক্তের শিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী

হেনস্তাকারী ব্যক্তি তন্ময়
হেনস্তাকারী ব্যক্তি তন্ময়  © সংগৃহীত

রাজশাহীতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজলা গেইটে শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোয় ইংরেজি বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের একছাত্রী তার পরীক্ষা শেষে অটোরিকশা যোগে বাড়ি ফেরার পর হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। এ ঘটনায় আজ মো. মাসুদ রানা (৪৭) একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেনস্তাকারী ব্যক্তির নাম তন্ময়। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার অন্তর্গত আমজাদের মোড় এলাকায়। ছেলেটি রাবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটা ক্যাফের মালিক; যেটার নাম ‘হ্যাট্রিক ক্যাফে’ বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১২ মার্চ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে ইংরেজি বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী হ্যারাসড হন। এসময় তার সাথে থাকা ইংরেজি বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে হাতাহাতির সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে দুজনই শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন।

ঘটনা চলাকালীন ফেসবুকে লাইভ করেন ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফারহান মাহমুদ। ফারহানের লাইভ ভিডিও-এর সূত্র ধরে নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা।

লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত তন্ময় এক নারী শিক্ষার্থীকে মারতে উদ্যত হন এবং রিকশা করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে হেনস্তাকারী যুবক তন্ময় রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানের দিকে তেড়ে আসে এবং এরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহান জানান, আমি আমার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কাজলা গেইটে বাজার করছিলাম। এমন সময়ই আমার সাথে থাকা বান্ধবীকে টিজ করেন এক যুবক। আমরা প্রতিবাদ করায়, তন্ময় নামের ছেলেটি আমাকে ও আমার বান্ধবীর উপর চড়াও হয় এবং আমরা শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হই। এরপর ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হই, একপর্যায়ে তন্ময় নামের এই ছেলেটি আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে আবারও মারধর করার জন্য তেড়ে আসে। একজন নারী শিক্ষার্থীকে এভাবে হেনস্তা এবং এরপর মারধর করা, তাও আবার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে? আমরা মামলা করেছি; এ ঘটনা সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।

এ ঘটনার বিচার চেয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস মিনার বলেন, আজকে দুপুর বেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে আমাদের সহপাঠীর সাথে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটল; যেভাবে একজন ছেলে এবং একজন মেয়েকে ফিজিক্যালি এসল্ট করা হলো, এতে আমাদের বাকি ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান। আমরা পুলিশকে সেই কালপ্রিটের নাম, পরিচয়, ঠিকানা, ফেইসবুক আইডি এবং তার ছবি দিয়েছি এবং আশা করি তাকে আজকে রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানান, ঘটনাটি শোনার পরপরই আমার পুরো প্রক্টোরিয়াল বডিকে সেখানে পাঠাই; এছাড়া আরো কয়েকজন শিক্ষকও ছিল। আমি মতিহার থানার ওসিকেও বিষয়টি ইনফর্ম করি। আমরা চাই, অভিযুক্ত এই ছেলেটিকে যেন দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইটের সামনে আজকে দুপুরের একটি ঘটনার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।


সর্বশেষ সংবাদ