সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিক্ষোভ সমাবেশ
বিক্ষোভ সমাবেশ  © টিডিসি ফটো

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিএসএফ কর্তৃক সংগঠিত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে দোষীদের বিচার দাবি করে। 

এসময় বিক্ষোভ মিছিলে প্রতিবাদ সূচক ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ঢাকায় এবার উঠলো ডাক, বিএসএফ নিপাত যাক’, ‘ফেলানী স্বর্ণা জয়ন্ত, হত্যা চলছে অনন্ত’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় আগ্রাসনের বহিঃপ্রকাশ হল সীমান্ত হত্যা। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে দুই হাজারের অধিক হত্যা সংগঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত নতজানু পররাষ্ট্র নীতির জন্য আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার সুষ্ঠু পায়নি। বিজিবি শুধু পতাকা বৈঠক করে নিহত বাংলাদেশীদের লাশ নিয়ে আসার কাজেই নিয়োজিত। বিজিবিকে আগের সেই শক্তি ফিরিয়ে দিতে হবে যাতে তারা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রক্তচক্ষু দেখিয়ে সীমান্তে অবস্থান করতে পারে নতুবা বিজিবিকে পুনরায় বাংলাদেশ রাইলফেলসে (বিডিআর) জাগ্রত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির বলেন, আমরা বাংলাদেশ সীমান্তে হওয়া প্রতিটি হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে এসেছি। বিগত সময়ে বর্ডার গার্ডকে বস্তুত সীমান্তের দারোয়ান হিসেবে রাখা হয়েছে যে দারোয়ানের কেনো কর্তৃত্ব নাই। আমরা সীমান্তরক্ষীদের ক্ষমতায়নের জন্য এসেছি এবং আমাদের সীমান্ত রক্ষীদের হারানো ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন এই জুলাইয়ে আমরা আবার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই শহীদ ফেলানী ও শহীদ আবরার ছিল আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দুর্বার প্রেরণা। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেলানী ও আবরাররা বারবার ফিরে আসবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বলতে চাই, মেরুদন্ড নিয়ে চলুন। আমরা একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি চাই আপনাদের থেকে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভারত সরাসরি যুক্ত ছিল। দেশপ্রেমিক সেনাদের হত্যার পর বাংলাদেশে তারা পুতুল সরকার হাসিনার মাধ্যমে তাদের আগ্রাসনের শিকার বানিয়েছিল। তারা আমাদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশীদের লাশ আর মাদক ছাড়া কিছু দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি ভারতীয় মিডিয়া কীভাবে সন্ত্রাস ছড়িয়েছে। তারা চট্টগ্রাম, রংপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা চেয়ে উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার করছে। তাদের নেতারাও উসকানিমূলক কথা বলার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। তাদের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবর রচনা করতে হবে। সীমান্ত ২ সহস্রাধিক বাংলাদেশীকে হত্যায় দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ