বিশ্বসেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়

কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশের ৩ বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তানের ৯ ও ভারতের ৩৪

গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা
গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ধরনের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা-প্রতিষ্ঠান কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস)। মঙ্গলবার (০৪ জুন) ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ২০২৫: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’ শীর্ষক র‍্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়। র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পেয়েছে পাকিস্তানের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের রয়েছে ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে র‍্যাঙ্কিংয়ের এ তালিকায় প্রতিবেশি ভারত থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে দেশের রয়েছে মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে সরকারি রয়েছে ২টি বিশ্ববিদ্যালয়। আর বেসরকারি ১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

এবার বাংলাদেশ থেকে মোট সরকারি ও বেসরকারি মোট ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান হয়েছে। এগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

এবার বিশ্বসেরা ৬০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে চমক দেখিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে গতবছর র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬৯১-৭০০তম অবস্থান করেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। এবার তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ৫৫৪তম।

অন্যদিকে, তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বুয়েটের অবস্থান ৭৬১ থেকে ৭৭০ এর মধ্যে, গতবার ৮০১-৮৫০ এর মধ্যে অবস্থান ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের। ফলে র‍্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছে এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিরও।

আর তালিকায় তৃতীয় হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অবস্থান গতবার ছিল ৮৫১-৯০০ এর মধ্যে, এবার বিশ্ববিদ্যালয়টি র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছে। এবার তালিকায় নর্থ সাউথ ৯০১ থেকে ৯৫০ মধ্যে অবস্থান করছে।

তালিকায় ভারত থেকে জায়গা করে নিয়েছে মোট ৪৯টি বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের শীর্ষ ৫ বিশ্ববিদ্যালয় হলো- মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বোম্বে (আইআইটিবি), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি দিল্লি (আইআইটিডি), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি খড়গপুর (আইআইটি-কেজিপি)

আর পাকিস্তানের রয়েছে মোট ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়। পাকিস্তানের শীর্ষ ৫ বিশ্ববিদ্যালয় হলো- কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ইসলামাবাদ), লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, পাঞ্জাব কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ফয়সালাবাদ।

বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাঙ্কিং মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কিউএস তাদের ওয়েবসাইটে এই র‍্যাঙ্কিংয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে। ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ২০২৫: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’ শীর্ষক এই র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৬০০-এর পরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি। এ কারণে ঢাবি ছাড়া বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে কত নম্বরে, তা উল্লেখ করা হয়নি।

কিউএসের এবারের র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১ হাজার ৫০৩টি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১০০-তে ১০০ স্কোর নিয়ে এবারও প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজ ও তৃতীয় যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‍্যাঙ্কিংগুলোর একটি মনে করা হয়। এই র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন আটটি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়। প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর থাকে। সব সূচকের যোগফলের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারিত হয়।

কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ের সূচকগুলো হলো একাডেমিক খ্যাতি (একাডেমিক রেপুটেশন), চাকরির বাজারে সুনাম (অ্যামপ্লয়ার রেপুটেশন), শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত (ফ্যাকাল্টি-স্টুডেন্ট রেশিও), শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশনস পার ফ্যাকাল্টি), আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি রেশিও), আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রেশিও), আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক (ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ নেটওয়ার্ক) ও কর্মসংস্থান (অ্যাম্প্লয়মেন্ট আউটকামস)।


সর্বশেষ সংবাদ