ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ ১৪ সদস্যকে ৬ মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত বহিষ্কার

‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ সদস্যরা
‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ সদস্যরা  © ফাইল ফটো

গ্যাং তৈরি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্ম করার অভিযোগ রয়েছে ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত মার্চে তাদের (গ্যাং সদস্য) চিহ্নিত করতে আন্তহল তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪ জন বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ দু’বছর পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শৃঙ্খলা পরিষদের সভায় বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন।

বহিষ্কার হওয়া ১৪ জনের মধ্যে ২ জন শিক্ষার্থীকে দু’বছর, ৮ জনকে এক বছর এবং বাকি চারজনকে ৬ মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

২ বছর বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- শান্তি ও সংর্ঘষ অধ্যয়ন বিভাগ ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী তবারক মিয়া এবং ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ।

এক বছর বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের গোলাম ইসরাফ আরিফ সাহিল; অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এন্ড লিডারশীপ বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব; মার্কেটিং বিভাগের মো: শফিউল ইসলাম শোভন; মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো: ফারহান লাবিব; দর্শন বিভাগ ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাদনিম খান অর্ণব; মার্কেটিং বিভাগের মো: শফিউল ইসলাম শোভন; সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের হেদায়েতুন নূর রিশান এবং তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. সাদমান তৌহিদ।

৬ মাস বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- কবি জসীম উদ্দিন হলের এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ ইব্রাহিম; জসীম উদ্দিন হলের রহমান জিয়া ও সাকিব ফেরদৌস এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের ও কবি জসীম উদ্দিন হলের মো. নাইমুর দুর্জয়।

গত মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সামনে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধরের ঘটনায় আলোচনার আসে প্রলয় গ্যাংয়। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন জোবায়ের ইবনে হুমায়ূনের মা সাদিয়া আফরোজ খান। ১৯ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দেন তিনি। যেটির মামলা এখনো চলমান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই গ্যাংয়ের অভিযুক্ত দুই সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করে।

এদিকে সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, গত ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলভী আরসলান নামের এক ছাত্রকে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতনের ঘটনায় প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্য এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী তবারক মিয়া, একই হলের অর্গ্যানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এন্ড লিডারশিপ বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব, একই বিভাগের মুরসালিন ফাইয়াজ এবং অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগ এবং স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী জুবায়ের ইবনে হুমায়ূনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদেরকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে সাতদিন সময় বেঁধে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ