চার ছাত্রলীগ নেতাসহ রাবির ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সুপারিশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

প্রায় আট বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছাত্রলীগের চার নেতাসহ ১১ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে কমিটি।

এর মধ্যে একজনকে স্থায়ী ও বাকি ১০ জনকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল ও সতর্ক করতে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা শিক্ষার্থীর নাম আশিকুল্লাহ। তিনি আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ পাওয়া ছাত্রলীগের চার নেতা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম ওরফে শান্ত, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান এবং ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা।

এছাড়া ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইয়াসির আরাফাত, নজরুল, মাহিন, শাফিউল্লাহ, আলিফ ও শিশিরকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মামলা চলমান রয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা অপরাধের শাস্তির বিষয়টি শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনার পর শাস্তির সুপারিশ করা হয়। পরে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার শৃঙ্খলা কমিটির সভা হওয়ার কথা। পদাধিকারবলে শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন উপাচার্য এবং সদস্যসচিবের দায়িত্বে থাকেন প্রক্টর। তবে গত ১৪ বছরে সভা হয়েছে মাত্র দুটি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছিল।

শৃঙ্খলা কমিটির কয়েক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে মারধর ও ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ও সোলাইমানকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে কমিটি। সেইসঙ্গে অনাবাসিক শিক্ষার্থী হওয়ায় তাদের দ্রুত হল থেকে অপসারণ করতে বলা হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে আইন বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে একই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাকে আজ স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। 

এর আগে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় আইবিএ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হাসিবুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকজনকে সতর্ক করা হয়েছে।

শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ‌‘দীর্ঘদিন পর আজ শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছে। সভায় অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী কারও আবাসিকতা বাতিল, সাময়িক বহিষ্কার ও সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী সিন্ডিকেট সভায় বিষয়গুলো উত্থাপন করা হবে। তারপর বিস্তারিত জানানো হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ