এবার সবাই শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৫৬ PM , আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৫৬ PM
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের প্রস্ততি সভা হয়েছে। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। আগের দু’বছর করোনার বিধিনিষেধ থাকলেও এ বছর প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান শ্রদ্ধা জানাতে পারবে শহীন মিনারে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল, সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদ ভাষা সৈনিক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের গভীর চিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বিগত বছরগুলোর মতো এবারও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ এ সতর্কতা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করার জন্য সবাইকে আহবান জানান।
পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে সমন্বয় কমিটি কর্তৃক গৃহীত সব কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রেখে সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি ২১শে ফেব্রুয়ারির সব কর্মসূচি এবং প্রস্তুতি সবিস্তরে বর্ণনা করেন।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গৃহীত কর্মসূচি ও প্রস্তুতিসমূহ হলো-
১. মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং আজিমপুর কবরস্থানে সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা থাকবে।
২. রাষ্ট্রীয় নিয়ম অনুযায়ী একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীমূল প্রস্তুত করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং যথাসময়েই তা সম্পন্ন হবে।
৩. রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেতা। এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধানবৃন্দ, ভাষা সৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য , সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিন ও হলের প্রাধ্যক্ষ।
৪. এ বছর প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। সুষ্ঠুভাবে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের সময় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ করা হয়েছে।
৫. সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্ত্বর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করা যাবে। শহীদ মিনারের দিকের রাস্তাটি যাবার জন্য ব্যবহৃত হলেও আসার কোনো সুযোগ থাকবে না।
৬. এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপও প্রণীত হয়েছে। রুট-ম্যাপটি শহীদ মিনার এলাকায় লাগানো থাকবে।
৭. একুশে উদ্যাপনে সার্বিক ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের জন্য শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। কোনো ত্রুটির বা সমস্যা দেখা দিলে সেখানে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
৮. ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থান এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গমন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
৯. ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সঙ্গে অমর একুশে পালনের লক্ষ্যে শহীদ মিনার এলাকায় কোবো মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না এবং শহিদ মিনার এলাকায় কোন ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না।
১০. প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। তাদেরকে যথাযথ সহযোগিতা প্রদানের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে ২২ জানুয়ারি নওয়াব আলী সিনেট মিলনায়তনে এক প্রস্তুতি সভায় সব ধরনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াকে সমন্বয়কারী, সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীকে সদস্য-সচিব করে অমর একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া এ উপলক্ষে বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।